৫ ইসলামি ব্যাংকের দায়িত্ব যাচ্ছে কার হাতে?
- বাংলাকন্ঠ রিপোর্ট:
- প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:০০ PM , আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:৩১ PM

দীর্ঘ আলাপ-আলোচনা ও জল্পনা শেষে দেশের ব্যাংক খাতে এক বড় পরিবর্তনের সূচনা হতে যাচ্ছে। সংকটে থাকা পাঁচটি ইসলামী ব্যাংককে একীভূত করার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশের আওতায় এ পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। একীভূত হতে যাওয়া ব্যাংকগুলো হলো—এক্সিম ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, আজ মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বিশেষ সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে। এই পাঁচটি ব্যাংককে একীভূতকরণের প্রধান উদ্দেশ্য হলো আমানতকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং ব্যাংকিং খাতের ওপর আস্থা ফিরিয়ে আনা।
একীভূত হতে যাওয়া প্রতিটি ব্যাংকে একজন করে অস্থায়ী প্রশাসক নিয়োগ করা হবে। এই প্রশাসকদের সহায়তায় চারজন করে কর্মকর্তা কাজ করবেন। প্রশাসক দায়িত্ব নেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)-এর পদ বাতিল হয়ে যাবে। একই সঙ্গে ব্যাংকগুলোর শেয়ার শূন্য ঘোষণা করা হবে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিশ্চিত করেছে যে আমানতকারী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বার্থ সম্পূর্ণভাবে সুরক্ষিত থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিকল্পনা অনুযায়ী, একীভূত করার আগে একটি নতুন ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়া হবে, যার সম্ভাব্য নাম হতে পারে 'ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক'। এটি প্রাথমিকভাবে সরকারের নিজস্ব মূলধনে প্রতিষ্ঠিত হবে। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে শেয়ার বিক্রি করে সরকার তার বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত নেবে। বড় আমানতকারীদের নতুন ব্যাংকের শেয়ার কেনার প্রস্তাব দেওয়া হবে, আর ছোট আমানতকারীরা চাইলে যেকোনো সময় তাদের নগদ অর্থ তুলে নিতে পারবেন।
বিগত সরকারের সময়ে ব্যাপক জালিয়াতি ও অনিয়মের কারণে এই ব্যাংকগুলোর ৪৮ থেকে ৯৮ শতাংশ ঋণ খেলাপি ঋণে পরিণত হয়েছে। এই একীভূতকরণ প্রক্রিয়া সফল করতে মোট ৩৫,২০০ কোটি টাকার প্রয়োজন, যার মধ্যে সরকার ২০,২০০ কোটি টাকা দেবে। এই বিপুল পরিমাণ অর্থের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর আর্থিক ভিত্তি নতুন করে সাজানো হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর আমানতকারীদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, "আমানতকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, সরকার সম্পূর্ণ দায়ভার নেবে।" এই পদক্ষেপ ব্যাংক খাতের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।