কবে উৎপাদনে যাবে রূপপুর?

রূপপুর
  © ফাইল ছবি

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনের চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে। দীর্ঘ এক দশক রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা রোসাটমের তত্ত্বাবধানে অবকাঠামো নির্মাণ শেষে বর্তমানে চলছে পরমাণু জ্বালানি ইউরেনিয়াম লোডের প্রস্তুতি। তবে এই পর্যায়ে এসে প্রকল্প নিয়ে নানা নেতিবাচক প্রচারণা ও গুজবে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। প্রকল্প কর্তৃপক্ষের দাবি, আইএইএ’র (আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা) প্রতিবেদন বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।

নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (এনপিসিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সাবেক প্রকল্প পরিচালক ড. মো. জাহেদুল হাছান জানিয়েছেন, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বায়রা’র অনুমোদন ছাড়া কোনোভাবেই ফুয়েল লোডিং শুরু হবে না। আইএইএ’র শর্ত ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণ করেই উৎপাদন শুরু করা হবে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, আইএইএ’র একটি বিশেষজ্ঞ দল গত ১০–২৭ আগস্ট রূপপুরে প্রি-ওসার্ট মিশন পরিচালনা করে। সফর শেষে তারা সুপারিশ ও মতামত সম্বলিত একটি প্রাথমিক প্রতিবেদন দিয়েছে। তিন মাসের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। সেই প্রতিবেদন বাস্তবায়ন ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের পরই চুল্লিতে জ্বালানি লোড করা হবে। এর আগে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সুযোগ নেই।

আইএইএ মূলত তিনটি বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সুপারিশ করেছে—
১. অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা আরও জোরদার করা,
২. প্লান্ট অপারেশনে মান ও তত্ত্বাবধান শক্তিশালী করা,
৩. কমিশনিং চলাকালে যন্ত্রপাতির সংরক্ষণ নিশ্চিত করা।

এ ছাড়া প্রায় ১,৫০০ নন-নিউক্লিয়ার টেস্টের মধ্যে ইতোমধ্যে ৯০০ সম্পন্ন হয়েছে, বাকিগুলো দ্রুত শেষ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রকল্প কর্মকর্তারা জানান, আইএইএ’র পর্যবেক্ষণ কোনো গোপনীয় প্রতিবেদন নয়; বরং স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার অংশ। তারা মনে করেন, এ ধরনের সুপারিশই প্রমাণ করে যে প্রকল্পের নিরাপত্তা বিন্দুমাত্র ঝুঁকি নিয়ে ছাড় দেওয়া হবে না।

এনপিসিবিএল-এর এমডি ড. জাহেদুল হাছান বলেন, তাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার নিরাপত্তা। প্রয়োজনে সময় লাগলেও তড়িঘড়ি করে বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর প্রশ্নই আসে না। ইতোমধ্যে বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা শেষ হয়েছে, বাকি পরীক্ষাগুলোও দ্রুত শেষ হবে। তিনি আরও জানান, রূপপুর প্রকল্পের জন্য আইএইএ’র পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন অন্যান্য দেশের তুলনায় ইতিবাচক ও সন্তোষজনক।


মন্তব্য