শিক্ষাবিদ ও নারীনেত্রী মাহফুজা খানমের মৃত্যু, বাকবিশিস'র শোক
- বাংলাকন্ঠ ডেস্ক:
- প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৫, ০৭:২২ PM , আপডেট: ১২ আগস্ট ২০২৫, ০৭:৩১ PM

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সমাজসেবক, নারীনেত্রী, শিশু সংগঠক ও সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের স্ত্রী বীরমুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মাহফুজা খানম মৃত্যু বরণ করেছেন। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তািনি মৃত্যুবরণ করেন।
অধ্যাপক মাহফুজা খানমের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (বাকবিশিস)। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর স্বাক্ষরিত প্রেস বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাহফুজা খানম বাংলাদেশে শিক্ষা ও শিক্ষক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন।
তিনি বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (বাকবিশিস) এর উপদেষ্টার পাশাপাশি নারী অধিকার সংরক্ষণেও বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছেন। বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণে সংগ্রাম করে গেছেন আমৃত্যু। তাঁর মৃত্যুতে জাতি সত্যিকার অর্থে একজন দেশপ্রেমিক বীরাঙ্গনাকে হারালো। এমন একজন মানুষের অভাব সহজে পুরণ হবার নয়। বাকবিশিস নেতৃবৃন্দ প্রয়াত অধ্যাপক মাহফুজা খানমের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
উল্লেখ্য, মাহফুজা খানম ১৯৪৬ সালের ১৪ এপ্রিল কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলা বাজার গার্লস স্কুলে পড়েছেন। তিনি ১৯৬৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক এবং ১৯৬৭ সালে একই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ছাত্রাবস্থায় তিনি ছাত্র ইউনিয়নের নেত্রী ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৬৬-৬৭ ডাকসু নির্বাচনে ভিপি হয়েছিলেন। বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে তিনি ঢাকা ইডেন কলেজ ও বদরুন্নেছা কলেজের পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক ছিলেন।
তিনি মনিকগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের ১৫তম অধ্যক্ষ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। অধ্যাপক মাহফুজা খানম এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতির ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্যও। তিনি শিশুসংগঠন খেলাঘর আসরের চেয়ারপার্সন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
মাহফুজা খানম ঢাকার মানিকগঞ্জ সমিতি, পেশাজীবি নারী সমাজ এবং বিশ্ব শিক্ষক সমিতি সফেডারেশন (FISE) সহ বেশ কয়েকটি সংগঠনের সভাপতি ছিলেন। তিনি ইতিহাস একাডেমির নির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি ও ২০০৯ সালে বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আমৃত্যু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য হিসেবে ছিলেন। শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২০২১ সালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক লাভ করেন।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। দুই পুত্র ও এক মেয়ে সন্তান আছেন। তিনি বিশিষ্ট আইনজীবী ও সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের জীবনসঙ্গী ছিলেন।