শিক্ষাবিদ ও লেখক অধ্যাপক যতীন সরকারের মৃত্যু: বাকবিশিস-এর শোক
- বাংলাকন্ঠ ডেস্ক:
- প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৫, ০৭:১৯ PM , আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২৫, ০৭:১৯ PM

বাংলাদেশের স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক ও বুদ্ধিজীবী যতীন সরকার মারা গেছেন। বুধবার বিকেলে ময়মনসিংহ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (বাকবিশিস)। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর এক প্রেস বিবৃতিতে বলেন, অধ্যাপক যতীন সরকার বাংলাদেশে শিক্ষা বিস্তারে অনবদ্য অবদান রেখেছেন। তাঁর উদার ও মননশীল লেখনী মানুষের চিন্তার জগতকে প্রসারিত করেছে। এছাড়াও অধ্যাপক যতীন সরকার বাংলাদেশের শিক্ষা আন্দোলনে অনিবার্য অপরিহার্য নাম।
তিনি বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (বাকবিশিস) এর একজন প্রতিষ্ঠাকালীন নেতা ছিলেন। সর্বশেষ তিনি এ সংগঠনের উপদেষ্টা হিসেবে শিক্ষকের অধিকার আদায়ে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছেন। বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণে আমৃত্যু সংগ্রাম করে গেছেন অধ্যাপক যতীন সরকার। তাঁর মৃত্যুতে জাতি সত্যিকার অর্থে একজন দেশপ্রেমিক শিক্ষক ও সমাজ সংস্কারককে হারালো। যতীন সরকারের মৃত্যুতে আরেকটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের পতন হয়েছে। তাঁর অভাব কখনও পুরণ হবে না।
বাকবিশিস নেতৃবৃন্দ প্রয়াত অধ্যাপক যতীন সরকারের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৯০ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
উল্লেখ্য, যতীন সরকার ১৯৩৬ সালের ১৮ আগস্ট নেত্রকোণার কেন্দুয়ার চন্দপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ময়মনসিংহের নাসিরাবাদ কলেজের বাংলা বিভাগের সাবেক শিক্ষক। সুদীর্ঘকাল ধরে তিনি মননশীল সাহিত্যচর্চা, বাম রাজনীতি এবং প্রগতিশীল আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। দুই মেয়াদে তিনি বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
লেখক হিসেবে যতীন সরকার ২০১০ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন। ২০০৭ সালে তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পান। ২০০৫ সালে ‘পাকিস্তানের জন্ম-মৃত্যু দর্শন’ গ্রন্থের জন্য তিনি প্রথম আলো বর্ষসেরা গ্রন্থ পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া তিনি ড. এনামুল হক স্বর্ণপদক, খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার, মনিরুদ্দীন ইউসুফ সাহিত্য পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননা লাভ করেন। তিনি ৪২ বছরের বেশি সময় শিক্ষকতা পেশায় থেকে ২০০২ সালে অবসর নেন।