‘ন্যায্য নম্বর দিয়ে সততাকে বেছে নিয়েছি’

এইচএসসি
  © সংগৃহীত

অতিরিক্ত নম্বর দিয়ে সন্তুষ্টি নয়, ন্যায্য নম্বর দিয়ে সততাকে বেছে নিয়েছি বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার। তিনি বলেন, আগে ভালো ফল দেখাতে গিয়ে শেখার উদ্দেশ্যকে সংকটে ফেলা হয়েছিল।

আজ বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) চলতি বছরের এইচএসসির রেজাল্ট বিষয়ে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন শিক্ষা উপদেষ্টা।

ড. সি আর আবরার বলেন, এ বছরের এইচএসসির ফল অনেককেই অবাক করেছে। এই ফলাফল আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। আমাদের লক্ষ্য একটাই, সৎ ও বাস্তব শিক্ষা ব্যবস্থা।

তিনি বলেন, অতিরিক্ত নম্বর দিয়ে সন্তুষ্টি নয়, ন্যায্য নম্বর দিয়ে সততাকে বেছে নিয়েছি। ফল বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানে সামনের সপ্তাহে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে সভা করা হবে। তিনি জানান, প্রত্যেকটি শিক্ষা বোর্ডেকে ফলাফল মূল্যায়ন করতে বলা হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ফলাফল মানে শুধু একটি পরিসংখ্যান নয়; এটি পরিবার, আশা, পরিশ্রম এবং ভবিষ্যতের গল্প। আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাই যারা ভালো ফল করেছে—তোমাদের সাফল্য আমাদের গর্ব। একই সঙ্গে যাদের ফল প্রত্যাশামতো হয়নি, আমি তাদের প্রতিও সহানুভূতি জানাই। আমি জানি, হতাশা আছে, কিন্তু আমি বিশ্বাস করি এই মুহূর্তও শেখার অংশ। তোমাদের পরিশ্রম কখনোই বৃথা যায় না।

তিনি বলেন, এ বছর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল অনেককে বিস্মিত করেছে। পাশের হার এবং জিপিএ–৫ সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় কম, এবং প্রশ্ন উঠেছে—কেন? এর উত্তর জটিল নয়, বরং সহজ, কিন্তু অস্বস্তিকর।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, প্রাথমিক স্তর থেকেই শেখার ঘাটতি তৈরি হয়, এবং সেই ঘাটতি বছরের পর বছর সঞ্চিত হয়। কিন্তু আমরা দীর্ঘদিন এই বাস্তবতার মুখোমুখি হতে চাইনি। আমরা এমন এক সংস্কৃতি গড়ে তুলেছি যেখানে সংখ্যাই সত্য হয়ে উঠেছিল—পাসের হারই সাফল্যের প্রতীক, জিপিএ–৫–এর সংখ্যা ছিল তৃপ্তির মানদণ্ড। ফলাফল ভালো দেখাতে গিয়ে আমরা অজান্তেই শেখার প্রকৃত সংকট আড়াল করেছি। আমি সেই সংস্কৃতির পরিবর্তন চাই। একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রী হিসেবে আমি চাই, শিক্ষা ব্যবস্থা আবার বাস্তবতাকে প্রতিফলিত করুক। যে ফলাফল শিক্ষার্থীর শেখাকে সত্যিকারের মূল্যায়ন করে, সেটিই হোক আমাদের সাফল্যের মানদণ্ড।


মন্তব্য