আন্দোলনে নামছে ফেল করা শিক্ষার্থীরা
- বাংলাকন্ঠ রিপোর্ট:
- প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:১৬ PM , আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:১৬ PM

সদ্য প্রকাশিত ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলে নজিরবিহীন ধসের প্রতিবাদে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন অকৃতকার্য ও আশানুরূপ ফল না পাওয়া শিক্ষার্থীরা। চার দফা দাবিতে তারা আগামী রোববার (১৯ অক্টোবর) বেলা ১১টায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সামনে গণজমায়েতের আহ্বান জানিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ কর্মসূচি ঘিরে ইতোমধ্যে ব্যাপক প্রচার চলছে।
চলতি বছর ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার দাঁড়িয়েছে ৫৮.৮৩ শতাংশ, যা গত ২১ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০০৪ সালে পাসের হার ছিল ৪৭.৭৪ শতাংশ। শুধু পাসের হারই নয়, জিপিএ-৫ প্রাপ্তিসহ প্রায় সব সূচকেই বড় ধরনের পতন ঘটেছে। ফল প্রকাশের পরপরই শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের ঘোষণা দেয়, যদিও আয়োজকদের বিস্তারিত পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানা গেছে।
শিক্ষার্থীরা যে চার দফা দাবি উত্থাপন করেছে, তা হলো—
১. সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা: ফল খারাপ হওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য দ্রুত সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার আয়োজন করা।
২. খাতা পুনর্মূল্যায়ন: বোর্ড চ্যালেঞ্জের ক্ষেত্রে কেবল খাতা পুনর্নিরীক্ষণ নয়; বরং খাতার পূর্ণাঙ্গ পুনর্মূল্যায়ন করা এবং ১০০ নম্বরের সকল অংশ (এমসিকিউ, সিকিউ, প্র্যাকটিক্যাল) রিচেক করা।
৩. নম্বর বিভাজন প্রদর্শন: ফেল করা বিষয়ের নম্বর সকল অংশসহ (এমসিকিউ, সিকিউ, প্র্যাকটিক্যাল) আলাদাভাবে মার্কশিটে প্রদর্শন করা।
৪. সম্মিলিত পাসের ব্যবস্থা: সিকিউ ও এমসিকিউ মিলিয়ে সম্মিলিতভাবে পাশের ব্যবস্থা চালু করা।
ফল বিপর্যয়ের চিত্র:
২০২৫ সালের এইচএসসির ফলে অধিকাংশ বোর্ডেই পাসের হার রেকর্ড পরিমাণে কমেছে।
• পাসের হার: ১১টি বোর্ডে গড় পাসের হার ৫৮.৮৩ শতাংশ, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ১৯ শতাংশ কম।
• সিলেট বোর্ড: এ বোর্ডে পাসের হার ৫১.৮৬ শতাংশ, যা গতবারের চেয়ে প্রায় ২৪ শতাংশ কম।
• কুমিল্লা বোর্ড: সবচেয়ে কম পাসের হার দেখা গেছে এ বোর্ডে, ৪৮.৮৬ শতাংশ।
• কারিগরি বোর্ড: ফল ধসের রেকর্ড ছাড়িয়েছে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। এ বোর্ডে পাসের হার কমেছে ২৬ শতাংশেরও বেশি।
গ্রুপভিত্তিক ফলে দেখা যায়, বিজ্ঞান বিভাগে পাসের হার ৭৮.৭২ শতাংশ, ব্যবসায় শিক্ষায় ৫৫.৫৮ শতাংশ এবং মানবিকে সবচেয়ে কম ৪৮.২৩ শতাংশ।
শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, এই অস্বাভাবিক ফল বিপর্যয়ের কারণে অসংখ্য শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন এবং ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে, যার প্রতিকার চেয়েই তারা এই আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন।