সরকার ও এনসিপির কঠোর সমালোচনায় সালাহউদ্দিন

সরকার ও এনসিপির কঠোর সমালোচনায় সালাহউদ্দিন
যুবদল আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল-পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য দেন সালাহউদ্দিন আহমদ


সরকার ও এনসিপির কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, যারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কথা বলছে, কাদের উদ্দেশ্য করে তা বলা হচ্ছে?’এনসিপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন,‘এই সরকারের অংশ আপনারা (এনসিপি)। আপনাদের দুজন উপদেষ্টা সরকারে বসে আছেন। দুই দিন পরে তাঁরা আপনাদের সঙ্গে যোগ দেবেন, আপনাদের সঙ্গে নির্বাচন করবেন। এই দৃশ্য দেখার জন্য অপেক্ষা করছি। তাই অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে বাক্যচয়ন ও রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রণয়ন করা দরকার।’

আজ ১৭ জুলাই বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে জাতীয়তাবাদী যুবদল আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল-পূর্ব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়।

 প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আপনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করছেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলছেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশনকে এখনো ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো নির্দেশনা দেননি। আশা করব, জনগণকে আশ্বস্ত করবেন। অতিশিগগির নির্বাচন কমিশনকে সেই নির্দেশনা দেবেন।’

গোপালগঞ্জের প্রসঙ্গ টেনে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা আশা করিনি, ফ্যাসিবাদের পতিত শক্তি গোপালগঞ্জে হোক বা যেখানে হোক, গণ-অভ্যুত্থানের শক্তির ওপর হামলা করার সাহস পাবে।’

সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির সমালোচনা করে  সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা জুলাই গণ-অভ্যুত্থান করেছিলাম ডেমোক্রেসির (গণতন্ত্রের) জন্য। এখন দেখতে পাচ্ছি, সারা দেশে মবোক্রেসির (উচ্ছৃঙ্খল জনতার সংঘবদ্ধ আক্রমণ) রাজত্ব হচ্ছে।’

এ সময় রাজনীতির ময়দানে এনসিপিকে আরও অভিজ্ঞতা অর্জনের পরামর্শ দিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘যেভাবে তোমরা যাচ্ছ, যেভাবে এনসিপির কর্মসূচি গ্রহণ দেখছি, তাতে একটা মেসেজ (বার্তা) পাচ্ছি—কোনো না কোনো বাহানায় এমন কোনো অবস্থার সৃষ্টি করা যাতে বলতে পারো, সরকার কোনো কিছুর নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। এই সরকার নির্বাচন কীভাবে দেবে?’

এনসিপির সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরও বলেন, ‘কিছু প্রশ্ন আপনারা ইতিমধ্যেই তুলেছেন। (বলছেন), এই নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ নয়। কেন? শাপলা প্রতীক না দিলেই কি নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা যায়? জাতীয় প্রতীকের মার্কা ছাড়া বাংলাদেশে কি আর কোনো মার্কা ছিল না? এই প্রশ্ন তো আমরাও তুলতে পারি।’ তাই রাজনৈতিক বক্তব্য প্রদানকালে রাজনৈতিক ইতিহাস চর্চা করে তারপর বক্তব্য রাখা উচিত।

ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলোর মধ্যে ভাঙন সৃষ্টির সুযোগ পেলে পতিত ফ্যাসিবাদ আবার বিজয়ী হবে উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্যে যাতে কোনো ফাটল সৃষ্টি না হয়। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ভিন্নমত থাকবে, কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় সবাই যাতে একই রাস্তায় এগিয়ে যেতে পারি।

যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্নার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, যুবদলের সহসভাপতি রেজাউল কবির, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান প্রমুখ।


মন্তব্য