থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সংঘাত, কার শক্তি কত?
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৫, ১২:০৩ PM , আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৫, ১২:০৩ PM

ইরান-ইসরাইল যুদ্ধের শেষ না হতেই নতুন যুদ্ধের দামামা বেজে উঠেছে এশিয়ার দুই দেশে। সীমান্ত নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এবার থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে সংঘাত শুরু হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন করে যুদ্ধের আশংকা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) পাল্টাপাল্টি বিমান ও রকেট হামলা চালিয়েছে প্রতিবেশী দেশ দুটির সামরিক বাহিনী। কম্বোডিয়ার সামরিক স্থাপনায় হামলায় মার্কিন এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে থাইল্যান্ড। কম্বোডিয়াও রকেট হামলা চালিয়েছে। এতে থাইল্যান্ডে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্যাংকক। তাদের মধ্যে ১১ জনই বেসামরিক মানুষ। কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে এখনো হতাহতের কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে শত বছরের বেশি সময় ধরে বিরোধ চলছে। ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসকেরা দুই দেশের মধ্যে সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে বিরোধের সূত্রপাত ঘটে।
লন্ডনভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের তথ্য অনুযায়ী, দুটি দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং অস্ত্রাগারের তথ্য তুলে ধরা হলো—
কম্বোডিয়া: ২০২৪ সালে কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা বাজেট ছিল ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার এবং ১ লাখ ২৪ হাজার ৩০০ সক্রিয় প্রতিরক্ষা কর্মী। ১৯৯৩ সালে দেশটির প্রাক্তন কমিউনিস্ট সামরিক বাহিনী এবং দুটি অন্যান্য প্রতিরোধ বাহিনীর একীভূতকরণের মাধ্যমে সশস্ত্র বাহিনী প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
থাইল্যান্ড: ন্যাটো সদস্যের বাইরে অন্যতম মার্কিন মিত্র থাইল্যান্ডের একটি বিশাল ও সমৃদ্ধ সামরিক বাহিনী রয়েছে। এর প্রতিরক্ষা বাজেট (২০২৪ সাল অনুযায়ী) ৫ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলার এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীতে দেশটির ৩ লাখ ৬০ হাজারের বেশি সক্রিয় সশস্ত্র রয়েছে।
বিমানবাহিনী
কম্বোডিয়া এয়ার ফোর্স: দেশটির বিমানবাহিনীর সদস্য সংখ্যা মাত্র দেড় হাজার। এ ছাড়া দেশটির বিমানবাহিনীতে ১০টি পরিবহন বিমান ও ১০টি পরিবহন উড়োজাহাজের ছোট একটি বহর আছে। কম্বোডিয়ার বিমানবাহিনীর কাছে নেই কোনো যুদ্ধবিমান। তবে ১৬টি বহুমুখী অভিযান পরিচালনাকারী উড়োজাহাজ রয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি সোভিয়েত যুগের এমআই-১৭ এবং ১০টি চীনা জেড-৯এস।
থাইল্যান্ড এয়ার ফোর্স: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সজ্জিত ও প্রশিক্ষিত বিমানবাহিনীর মধ্যে থাইল্যান্ড একটি। এই বাহিনীতে প্রায় ৪৬ হাজার সদস্য এবং ১১২টি কমব্যাট বিমান রয়েছে, যার মধ্যে আছে ২৮টি এফ-১৬ ও ১১টি সুইডিশ গ্রিপেন যুদ্ধবিমান। এ ছাড়াও তাদের বহরে আছে প্রায় এক ডজন উড়োজাহাজ এবং কয়েক ডজন হেলিকপ্টার।
নৌবাহিনী
কম্বোডিয়ার নৌবাহিনী: কম্বোডিয়ান নৌবাহিনীর সদস্য সংখ্যা আনুমানিক ২ হাজার ৮০০। এর মধ্যে ১ হাজার ৫০০ নৌ পদাতিক সেনা। ১৩টি টহল এবং উপকূলীয় যুদ্ধ জাহাজ এবং একটি উভচর অবতরণ জাহাজ রয়েছে দেশটির নৌবহরে।
থাইল্যান্ড নৌবাহিনী: থাইল্যান্ডের নৌবাহিনী বেশ বড়। এই বাহিনীর সদস্য সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার। এতে নৌ-বিমান ইউনিট, মেরিন, উপকূলরক্ষী বাহিনী ও নিয়োগপ্রাপ্ত সদস্যরা রয়েছেন। থাই নৌবহরে একটি বিমানবাহী রণতরী, সাতটি ফ্রিগেট, ৬৮টি টহল ও উপকূলীয় যুদ্ধজাহাজ রয়েছে।
এ ছাড়া থাই নৌবহরে কয়েকটি উভচর এবং অবতরণকারী জাহাজ রয়েছে। এসব জাহাজে শত শত সৈন্য ও ১৪টি ছোট অবতরণকারী বিমান রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। দেশটির নৌবিমান ইউনিটের রয়েছে উড়োজাহাজ ও ড্রোনের নিজস্ব বহর। মেরিন কোরে ২৩ হাজার সদস্য আছেন। এই কোরের নিয়ন্ত্রণে আছে কয়েক ডজন সশস্ত্র যুদ্ধযান।
সূত্র: রয়টার্স