আইসিসির কর্মকর্তাদের ওপর কেন নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র?

নিষেধাজ্ঞা
  © ফাইল ছবি

গত ২২ মাসের অধিক সময় ধরে ফিলিস্তিনের অধিকৃত গাজায় গণহত্যা চালানোর পরেও নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দিচ্ছে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ব্যবস্থা নেওয়ায় উল্টো তাদের ওপরেই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে দেশটি। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্যানুসারে, কিম্বারলির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের বিরুদ্ধে তদন্ত পরিচালনার অভিযোগের কারণে। ফরাসি বিচারক জিউয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার অনুমোদন দিয়েছেন। অপর দুই ডেপুটি প্রসিকিউটরকে অভিযুক্ত করা হয়েছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘অবৈধ পদক্ষেপ’ নেওয়ার কারণে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও আইসিসিকে ‘জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। আইসিসি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আইনের অপব্যবহার ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চর্চার হাতিয়ার হয়ে উঠেছে বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে আইসিসি। এক বিবৃতিতে আদালত বলেছে, ‘এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা আদালতের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতার ওপর প্রকাশ্য আক্রমণ।’ একই সঙ্গে এ পদক্ষেপকে ‘নিয়মভিত্তিক আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলার অবমাননা এবং সারা বিশ্বের লাখো নিরপরাধ ভুক্তভোগীর প্রতি অবজ্ঞা’ বলেও নিন্দা জানিয়েছে আইসিসি।

ফ্রান্সও কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, এ নিষেধাজ্ঞা একটি স্বাধীন বিচারব্যবস্থার মৌলিক নীতির পরিপন্থী। ফরাসি বিচারক নিকোলা জিউ নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ায় প্যারিস বিশেষভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

অপরদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু মার্কিন সিদ্ধান্তকে রীতিমতো গদগদ হয়ে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি একে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে চলমান ‘অপপ্রচারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা’ হিসেবে অভিহিত করে প্রশংসা করেছেন।

এর আগে গত বছর নভেম্বরে গাজায় ইসরায়েলি অভিযান নিয়ে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আইসিসি। এর জের ধরেই ওয়াশিংটন এ পদক্ষেপ নিল বলে মনে করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির প্রধান প্রসিকিউটর করিম খান ও আরও চার বিচারকের ওপর একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেয়। জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান তখন এ পদক্ষেপ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছিলেন।

এ ছাড়া গত জুলাইয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের বিশেষ প্রতিবেদক ফ্রান্সেসকা আলবানেজের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ওয়াশিংটন। তিনি ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের প্রকাশ্য সমালোচক এবং আইসিসিকে সমর্থন জানানোয় মার্কিন প্রশাসন এ ব্যবস্থা নেয়।


মন্তব্য