বাংলাদেশে পাঠানোর শঙ্কায় অমর্ত্য সেন!

অমর্ত্য সেন
  © ফাইল ছবি

নিজ দেশেই অত্যাচারের শিকার হচ্ছেন ভারতীয়রা। সম্প্রতি বাংলায় কথা বলায় দুই ভারতীয় মারধরের শিকার হয়েছেন। এছাড়া দেশটির নাগরিকদের পুশইন করে বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে। এবার এই তালিকায় যুক্ত হতে যাচ্ছেন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ও নোবেলজয়ী অধ্যাপক অমর্ত্য সেন? ভারতে ক্রমবর্ধমান ভাষাগত অসহিষ্ণুতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। 

শুক্রবার (২২ আগস্ট) কলকাতায় ‘ভারতের তরুণ সমাজ: তাদের কী ধরনের সামাজিক সুযোগ থাকা উচিত’ শীর্ষক এক আলোচনাসভায় তিনি বিশেষ করে বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাভাষী মানুষের প্রতি বিরূপ আচরণ নিয়ে মন্তব্য তুলে ধরেন। এ নিয়ে প্রতিবেদন করেছে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে প্রকাশিত একটি ঘটনার উল্লেখ করে অমর্ত্য সেন বলেন, পশ্চিমবঙ্গে বাংলাভাষী কিছু ব্যক্তিকে সন্দেহের ভিত্তিতে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি রসিকতা করে বলেন, তার নিজেরও ঢাকায় ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ তার পৈতৃক ভিটা সেখানেই।

৯১ বছর বয়সী এই নোবেল বিজয়ী বলেন, আমি সংবাদপত্রে দেখলাম যে এক ব্যক্তিকে বাংলায় কথা বলার কারণে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। এটি আমাকে কিছুটা চিন্তিত করেছে। স্বভাবসুলভ রসবোধে তিনি আরও বলেন, “আমি ঠিক করেছিলাম ফরাসি ভাষায় কথা বলব, কিন্তু সমস্যা হলো, আমি ফরাসি জানি না।

তিনি আরও বলেন, আমাকেও বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে, কারণ আমার পৈতৃক বাড়ি ঢাকায়। আর তাতে আমার খুব একটা আপত্তি নেই।

পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে জন্মগ্রহণকারী এই অর্থনীতিবিদ এ সময় একদল স্নাতক ও উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সঙ্গেও মতবিনিময় করেন।

বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে বাংলাভাষীদের হয়রানি নিয়ে গণমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে অমর্ত্য সেন বলেন, বাংলার মানুষ বা বাংলাভাষী মানুষ পেশাগত বাধা ও অসম্মানের শিকার হচ্ছেন।

তিনি ভারতীয় সভ্যতার বৈচিত্র্যের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং বলেন, বাংলা, পাঞ্জাবিসহ প্রতিটি সাংস্কৃতিক পরিচয়ের নিজস্ব গুরুত্ব ও ঐতিহ্য রয়েছে, যা উদ্‌যাপন করা উচিত। তিনি বলেন, আমি বলছি না যে বাঙালি সংস্কৃতি ও সভ্যতা সেরা, তবে আমাদের বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি ও সভ্যতার ইতিহাস তুলে ধরা উচিত। বাঙালি সংস্কৃতির প্রতি সম্মান থাকতে হবে। যদি না থাকে, তবে প্রতিবাদ করতে হবে।


মন্তব্য