কোনদিকে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ক?
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
- প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:১০ AM , আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:১০ AM

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ককে ‘অত্যন্ত একপাক্ষিক’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি জানান, নয়াদিল্লি যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর শুল্ক শূন্যে নামানোর প্রস্তাব দিলেও তা অনেক দেরিতে এসেছে।
সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প ভারতের কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ককে অসম অর্থনৈতিক সম্পর্ক হিসেবে আখ্যা দেন এবং রাশিয়ার অস্ত্র ও তেল কেনার জন্য ভারতকে দোষারোপ করেন। এতে দুই দেশের সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া ওই পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, "অনেকে বোঝে না যে আমরা ভারতের সঙ্গে খুব অল্প ব্যবসা করি। কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে বিপুল ব্যবসা করে। অর্থাৎ তারা আমাদের কাছে বিপুল পরিমাণ পণ্য বিক্রি করে, আমরা তাদের সবচেয়ে বড় 'গ্রাহক।' অথচ আমরা তাদের কাছে খুব সামান্য বিক্রি করি।"
পোস্টে তিনি আরও লেখেন, "তারা এখন শুল্ক শূন্যে নামানোর প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু অনেক দেরিতে হয়েছে। এটি তাদের বহু বছর আগে করা উচিত ছিল।"
ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্যে নয়াদিল্লি এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে এর আগেও ট্রাম্প প্রায়ই ভিত্তিহীন দাবি করে বলেছেন, উচ্চ শুল্কের হুমকির মুখে অন্যান্য দেশ যুক্তরাষ্ট্রকে বিশাল অর্থনৈতিক ছাড় দিতে রাজি হয়েছে।
ভারতকে নিয়ে ট্রাম্পের সর্বশেষ এই আক্রমণ এমন এক সময়ে এসেছে, যখন ওয়াশিংটনের কাছে দেশটি ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। চীনের বাড়তি আঞ্চলিক প্রভাব নিয়ে সংশয়ে থাকা এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ভারত থেকে আসা পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এটি ট্রাম্প প্রশাসনের বিভিন্ন দেশের ওপর আরোপিত শুল্কের মধ্যে অন্যতম সর্বোচ্চ। এছাড়া ভারতকে রাশিয়ার তেল কেনার জন্যও সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে।
তিনি সোমবার বলেন, "ভারত তার অধিকাংশ তেল ও সামরিক পণ্য রাশিয়ার কাছ থেকে কেনে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে খুব কমই।"
তবে ভারতের পক্ষ থেকে এই কঠোর শুল্ক আরোপের পর প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। বানিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পিযুষ গয়াল সম্প্রতি বলেছেন, "নয়াদিল্লি অন্য দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে কখনও পিছপা হবে না এবং কখনও দুর্বলতা দেখাবে না।"
বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে বাণিজ্য পুনর্গঠনের জন্য ট্রাম্পের প্রচেষ্টা যথেষ্ট আগ্রাসী । বর্তমান বাণিজ্য ব্যবস্থাকে তিনি একতরফা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অন্যায্য বলে বর্ণনা করেছেন। তবে এটি ক্রমবর্ধমান অপ্রত্যাশিত মার্কিন বিকল্প খুঁজতে থাকা অন্যান্য দেশগুলোকে আরও সহযোগিতামূলক সম্পর্কের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
চীনের বন্দর শহর তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিত দুই দিনের সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে বলেছেন, তিনি দুই দেশের সম্পর্ক উন্নত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।