রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ নাকি ভিন্ন কিছু?
- বিশেষ প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৫, ০৭:২৪ PM , আপডেট: ১৭ আগস্ট ২০২৫, ০৭:৫৫ PM
-11733.jpg)
সারা বিশ্বে বাংলাদেশের ৮২টি মিশন ও উপমিশন রয়েছে। এর মধ্যে ৬৫টির বেশি মিশন ও উপমিশন থেকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ছবি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ওয়াশিংটন, দিল্লি, বেইজিংসহ বেশির ভাগ মিশন থেকে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের ছবি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। গত বছরের ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর এসব ছবি সরানো হয়।
হঠাৎ করেই বিদেশের মিশন অফিসগুলো থেকে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের চুপ্পুর ছবি নামিয়ে ফেলায় সর্বত্র প্রশ্ন দেখা দেখা দিয়েছে যে তিনি কি আর থাকছেন না? নাকি অর্ন্তবর্তীকালীণ সরকার তাকে সরিয়ে দিচ্ছেন? এজন্যই অলিখিত নির্দেশে তার ছবি সব মিশন অফিস থেকে সরানো হচ্ছে?
রাষ্ট্রপতির ছবি সরিয়ে ফেলার এ খবর বেশি চাউর হয় শনিবার রাত থেকেই। এক পর্যায়ে রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের গুজবের ডালপালা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে রবিবার দিনভর এটিই হয়ে উঠে 'টক অব দ্যা কান্ট্রি।'
তবে রাষ্ট্রপতি সাহাবউদ্দিন চুপ্পুর ছবি বিদেশের সব মিশন অফিস থেকে সরিয়ে ফেলার বিষয়ে বাংলাকন্ঠের তরফ থেকে বিদেশে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি দূতাবাসে খবর নেওয়া হয়।
বিশেষ করে ইউরোপ, আমেরিকা অঞ্চলে কর্মরত কয়েকজন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিদেশে বাংলাদেশের যে মিশনগুলো রয়েছে, সেখান থেকে আগেই সরানো হয়েছে রাষ্ট্রপতির ছবি। তবে এ ছবি রাখা না রাখার কোনো নির্দেশনাও ছিল না বলে জানান তারা।
একই সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এ নিয়ে কোনো লিখিত নির্দেশ দেয়নি। তবে ‘মৌখিক’ নির্দেশ ছিল বলে দাবি করেছে কূটনৈতিক সূত্র।
সূত্র জানায়, মূলত গত কয়েক মাস ধরে রাষ্ট্রপতি ছবি সরানোর ক্ষেত্রে জিরো পোর্ট্রেট নীতি বা কোনো ছবি না রাখার সিদ্ধান্ত অনুসরণ করা হয়েছে। সেই নীতি অনুসরণ করতেই সরানো হচ্ছে তার ছবি।
রোববার (১৭ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদেশে অবস্থানরত এক জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক বাংলাকন্ঠকে বলেন, ‘আমি বলতে পারি, সদর দপ্তর থেকে লিখিত কোনো নির্দেশনা ছিল না। তবে ইঙ্গিতটা বোঝার দরকার আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে দুটি দিক রয়েছে—৫ আগস্টের পরিবর্তনের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সরানো হয়েছিল। এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে মিশনপ্রধানদের নিয়ে অনলাইনে একাধিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। যখন আমরা দেখি মন্ত্রণালয়ে কোনো ছবি নেই, তখন সেটা সংকেত দেয়। তাই রাষ্ট্রপতির ছবিও কয়েক মাস আগেই সরানো হয়েছিল।’
এই জ্যেষ্ঠ কূটনীতিকের ধারণা, অধিকাংশ মিশন কয়েক মাস আগে থেকেই একই ‘জিরো পোর্ট্রেট নীতি’ অনুসরণ করেছে।
জানা যায়, টেলিফোন কলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের এই নির্দেশনার তথ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত দূতদের অন্য মিশনে জানিয়ে দিতে বলা হয়েছে। যদিও রাষ্ট্রপতির ছবি সরানোর এ নির্দেশনা দক্ষিণ এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপের কয়েকটি মিশনের দূতরা পাননি।
তবে সরকারের এমন নির্দেশনা পাওয়ার কথা জানিয়েছে বিদেশের দুটি মিশন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দায়িত্বশীল এক কূটনীতিক জানান, ঢাকা থেকে কূটনৈতিক মিশন, কনস্যুলেট, কূটনীতিকদের কার্যালয় ও বাসভবন থেকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ছবি সরানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এটি আনুষ্ঠানিক চিঠি বা ই-মেইলের মাধ্যমে জানানো হয়নি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে টেলিফোনে সরকারের এই নির্দেশনার কথা অঞ্চলভিত্তিক কয়েকজন দূতকে জানানো হয়েছে। তারা অন্য মিশনে জানাচ্ছেন। একই সঙ্গে ছবি সরিয়ে ফেলার বিষয়টিও তদারকি করবেন তারা।