জরুরি বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা
- বাংলাকন্ঠ রিপোর্ট:
- প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:২৪ PM , আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:২৪ PM
-11528.jpg)
আগামী জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন কমিশনের সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ বৈঠক শুরু হয়।
জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সনদ বাস্তবায়নের উপায় ও প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভিন্নতার কারণেই এ অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
এর আগে কমিশনের সদস্যরা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও কমিশনের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
৬টি সংস্কার কমিশনের ৮৪টি প্রস্তাবের ওপর ভিত্তি করে প্রস্তুত করা হচ্ছে জুলাই জাতীয় সনদ। আগামী শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) এই সনদে স্বাক্ষর হওয়ার কথা। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাতে এর চূড়ান্ত খসড়া দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়। তবে সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে এখনো ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি।
কমিশনের পক্ষ থেকে সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি বিষয়ে একটি পৃথক সুপারিশ দেওয়ার কথা থাকলেও সেটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। যদিও দলগুলো গণভোটের মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়নে একমত, তবে ভোটের দিন, সময় ও প্রক্রিয়া নিয়ে মতভিন্নতা রয়ে গেছে। কিছু দল সনদে সইয়ের আগে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে নিশ্চয়তা চাচ্ছে।
সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ না দেখে স্বাক্ষর করবে না বলে জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। সূত্র জানায়, জামায়াতের সঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ আরও পাঁচটি ইসলামপন্থি দলও সনদে স্বাক্ষর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এছাড়া সনদে আপত্তি (নোট অব ডিসেন্ট) অংশে নিজেদের মতামত অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় বাংলাদেশ জাসদ, সিপিবি, বাসদ এবং বাসদ (মার্কসবাদী) সনদে সই করবে না বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে গণফোরামও স্বাক্ষর না করার বিষয়ে ভাবছে। এ ছাড়া গণতন্ত্র মঞ্চের একাধিক দলও সনদে সই না করার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
এদিকে বিএনপি সনদের অঙ্গীকার অংশে একটি নতুন ধারা যুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু কমিশন তা অন্তর্ভুক্ত করেনি।
গত ৩১ জুলাই সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের আনুষ্ঠানিক আলোচনা শেষ হয়। এরপর কয়েকটি দলের অনুরোধে সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে পুনরায় দলগুলো ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে কমিশন। ৯ অক্টোবর এ আলোচনা শেষ হয়।
সে আলোচনায় গণভোটের মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়নে ঐকমত্য তৈরি হয়। তবে গণভোটের ভিত্তি, সময় ও পদ্ধতি নিয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির মধ্যে মতপার্থক্য রয়ে গেছে।
৯ অক্টোবরের বৈঠকে কমিশন জানিয়েছিল, দলগুলোর ও বিশেষজ্ঞদের মতামত সমন্বয় করে সরকারকে বাস্তবায়ন পদ্ধতি সংক্রান্ত সুপারিশ দেওয়া হবে। এরপর কমিশন অনানুষ্ঠানিকভাবে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির সঙ্গে আলোচনা করে মতপার্থক্য কমানোর চেষ্টা চালায়।
সূত্রগুলো জানায়, এখনো নির্ধারিত হয়নি- গণভোটের ভিত্তি কী হবে, গণভোট সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে হবে কি না, কিংবা ভোটে কী ধরনের প্রশ্ন থাকবে। এসব বিষয়েই মূল মতভিন্নতা রয়ে গেছে।
ঐকমত্য কমিশন সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যার বৈঠকে দলগুলো সনদে সই করবে কি না- সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। প্রয়োজনে সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়েও নতুন করে আলোচনা হবে। বৈঠকটি বিটিভি নিউজে সরাসরি সম্প্রচার করার পরিকল্পনা রয়েছে।