পরিচয় গোপন করে দিল্লিতে আ'লীগের প্রেস ব্রিফিংয়ের চেষ্টা পন্ড

আওয়ামী লীগ
  © সংগৃহীত

একের পর এক দেশবিরোধী কর্মকান্ডের ধারাবাহিকতায় এবার ভারতের নয়াদিল্লীতে পরিচয় গোপন করে সংবাদ সম্মেলন করার চেষ্টা করেছিল বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত দল আওয়ামী লীগ। সবকিছু ঠিকঠাকও কিন্তু। কিন্তু বাদ সাধলো ভারত সরকার। তারা বাংলাদেশের সাথে সর্ম্পকের টানাপড়েনের বিষয়টি মাথায় রেখে আওয়ামী লীগের পলাতক শীর্ষ নেতা ও ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা সরকারের সাবেক মন্ত্রীদের ডাকা সংবাদ সম্মেলনটি করতে সায় দেননি। 
 
জানা গেছে, বুধবার নয়াদিল্লিতে সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করেছিলেন আওয়ামী লীগের পলাতক শীর্ষ নেতা ও ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা সরকারের সাবেক মন্ত্রীরা। কিন্তু প্রস্তুতির চূড়ান্ত মুহুর্তে ভারত সরকারের সায় না পেয়ে ভিন্ন নামে আহুত সংবাদ ব্রিফিংটি বাতিল করা হয়। যদিও আয়োজনকদের তরফে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হওয়া সাংবাদিকদের ‘এটা আপাতত স্থগিত’ জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করা হয়। এ নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে গণহত্যা’ চলছে এমন অভিযোগ তুলে বুধবার দিল্লিতে সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করেছিল ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতা ও সাবেক মন্ত্রীরা। তবে অনুষ্ঠানের ঠিক আগমুহূর্তে তা স্থগিত করা হয়। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম বলছে-

বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (বিএইচআরডব্লিউ) নামে একটি অস্তিত্বহীন সংগঠনের ব্যানারে ওই সংবাদ সম্মেলেনটির আয়োজন করা হয়েছিলো। বুধবার স্থানীয় সময় বিকাল সাড়ে ৫টায় এটি হওয়ার কথা ছিল। এর আয়োজক মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী যিনি নিজেকে ওই সংগঠনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার মহাসচিব হিসেবে দাবি করেন।

আয়োজকরা জানিয়েছিলেন, সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের ‘গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও মন্ত্রীরা’ গোপালগঞ্জের সাম্প্রতিক ‘সহিংসতা’ এবং দেশের ‘গণহত্যা’র প্রসঙ্গে বক্তব্য দেবেন। তবে সাংবাদিকরা সম্মেলনস্থলে জড়ো হওয়ার পর মিস্টার সিদ্দিকী এক বিবৃতিতে জানান, ঢাকার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতদের সম্মানে অনুষ্ঠানটি স্থগিত করা হয়েছে। ওই দুর্ঘটনায় ৩৫ জনের বেশি মানুষ, যাদের বেশিরভাগই শিশু, প্রাণ হারান এবং প্রায় ১৭০ জন আহত হন। জানা গেছে, গত কয়েক দিনে আওয়ামী লীগের একাধিক সাবেক নেতা- যেমন ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, হাসান মাহমুদ, ও মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল দিল্লি সফর করেছেন। তাদের কয়েকজনের এই সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার কথা ছিল।

সংবাদ সম্মেলনের আয়োজক মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী বলেন, এই গভীর শোকাবহ পরিস্থিতিতে এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমরা সংবাদ সম্মেলন স্থগিত করার কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এদিকে দিল্লিতে কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, এই সম্মেলন নিয়ে বাংলাদেশ সরকার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনানুষ্ঠানিকভাবে উদ্বেগ জানিয়েছিল। বিশেষ করে, আগামী ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক বছর পূর্ণ হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবেশী দেশের মাটিতে এমন একটি বিতর্কিত অনুষ্ঠান প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চলমান প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে- এমন আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। ভারতের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক সংস্থাটি বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস এর সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আলী সিদ্দিকী আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজন বলে পরিচিত।


মন্তব্য