জুলাই সনদ ইস্যুতে হার্ড লাইনে জামায়াত
- বাংলাকন্ঠ রিপোর্ট:
- প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৫, ০৮:৫০ PM , আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২৫, ০৮:৫০ PM

শেখ হাসিনা সরকার পতনের ঠিক এক বছরের মাথায় জুলাই সনদের খসড়া প্রকাশ করার পর এ নিয়ে শুরু হয়েছে বাকযুদ্ধ। এ যুদ্ধ এতটাই প্রকট আকার ধারণ করেছে যে বিএনপি বিষয়টিকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে নারাজ হলেও গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গড়া রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পর এবার হার্ড লাইনে যাচ্ছেন জামায়াতও। তাদের দাবি না মানলে শেষতক কোর্টেই এর সমাধান চান দলটি।
জামায়াত বলছে, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি না দিলে কমিশনসহ সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের মামলা করা হবে। দলটি হুঁশিয়ারী দিয়ে বলছে, ‘তাঁরা জাতির সঙ্গে আর কোনো তামাশা হতে দেবে না।’
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে চলমান সংলাপের ২৩তম দিনের মধ্যাহ্নভোজ বিরতির সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার বলেছি- আমরা পিআর চাই এবং অধিকাংশ দলও পিআরের পক্ষে। কমিশন বিরতির পর সিদ্ধান্ত দেবে বলেছে। আমরা আশা করি, তা ইতিবাচক হবে।’
সংলাপে সময় ব্যয় ও কঠোর পরিশ্রমের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা এত কষ্ট করলাম, আপনারা কাভার করলেন, কিন্তু বাস্তবায়ন না হলে এসবের কোনো মূল্য থাকবে না। বাস্তবায়ন না হলে শপথ করারও কোনো মূল্য থাকে না। তাই বাস্তবায়নটাই মুখ্য।’
জামায়াতের এ নেতা বলেন, ‘বিএনপি বলছে, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই। কিন্তু আমরা মনে করি, কেবল প্রতিশ্রুতির ওপর নির্ভর করলে হবে না। আইনি ভিত্তি না থাকলে এ চার্টার মূল্যহীন হয়ে পড়বে। সেজন্য আমরা কমিশন এবং সরকারের বিরুদ্ধে কমপেনসেট মামলা করবো।’
তিনি বলেন, ‘আইনি ভিত্তি ছাড়া এ চার্টার জিরো হবে। আমরা পরিষ্কার বলেছি, আইনগত ভিত্তি ছাড়া সই করবো না। এ সরকারের মেয়াদেই এটি কার্যকর করতে হবে। কাল থেকেই এটা সম্ভব।’
তাহের বলেন, ‘গত ২৩ দিনে আমরা যে সংখ্যক ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দেখেছি, তা আগের ২২ দিনে দেখিনি। তবুও এটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ। একজন ‘না’ বলতেই পারেন। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ পক্ষে থাকলে সেটা গ্রহণযোগ্যতা পায়।’
ডা. তাহের বলেন, আইনি ভিত্তি দেওয়া এখনই সম্ভব। অলটারনেটিভ আছে, উদাহরণ আছে। যারা বলছেন এটা এখন দেওয়া যাবে না, তারা জাতিকে বিভ্রান্ত করছেন। আমরা স্পষ্ট করছি -- আমরা আইনগত ভিত্তি চাই। আইনি ভিত্তি না থাকলে এ চার্টারে সই করার অর্থ নেই। এমন সনদে সই করার আর না করার মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা শুধু আমাদের মত নয়- উচ্চকক্ষ হলো একটা ‘ব্যালেন্স অব অথরিটি’। মূল আইন প্রণয়ন হবে নিম্নকক্ষে, আর উচ্চকক্ষ হবে গাইডিং ও কন্ট্রোলিং বডি।’
জামায়াতের এ নেতা বলেন, ‘আইনি ভিত্তি না দিয়ে যদি সরকার বাস্তবায়নের পথে না এগোয়, তাহলে আমরা এ সংস্কার প্রক্রিয়াকে অসমাপ্ত মনে করবো। সই করলেই যদি বাস্তবায়ন না হয়, তাহলে এটা এক ধরনের প্রহসন। সুতরাং আমরা সরকার ও কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। তারা যেন নিজেদের ওয়াদা বাস্তবায়নের জন্য এখনই উদ্যোগ গ্রহণ করে।’