মিত্রদের চোখে তারেকের ফেরা

তারেক
  © সংগৃহীত

দীর্ঘ ১৭ বছরেরও বেশি সময় পর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে আগামীকাল দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাকে বরণে ইতিমধ্যেই দলীয় সব প্রস্তুুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ নিয়ে রাজনীতির ভেতর-বাহির থেকে শুরু দেশ-বিদেশে সর্বত্রই এক আলোচনা -কী হবে রাজনীতিতে, কেমন হবে দেশের পরিস্থিতি? এসব প্রশ্নের পাশাপাশি বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলোই বা কিভাবে দেখছেন তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনকে?   

নির্বাচনের আগমুহূর্তে তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) অন্যান্য দলের নেতারা। তাঁর আগমন সব সংশয় কাটিয়ে সুষ্ঠু ভোটের পথকে সুগম করবে বলেও মনে করেন তাঁরা। একই সঙ্গে ভোটের মাঠে সব প্রার্থীর সহাবস্থান নিশ্চিতে তারেক রহমান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন বলে আশা করছেন অন্য দলের নেতারা।

দীর্ঘ ১৭ বছরেরও বেশি সময় পর দেশে ফিরছেন তারেক রহমান। দেশের বাইরে থেকেই এত বছর নেতৃত্ব দিয়েছেন বিএনপির। প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও ঐক্যবদ্ধ রেখেছেন দলকে। বাবা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া দলটির নেতৃত্বে থাকা মা বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ হওয়ার পর দূর প্রবাস থেকে দলের হাল ধরেছেন তারেক রহমান। এবার দেশে বসেই নেতৃত্ব দেবেন বিএনপিকে।

বিএনপির বাইরেও অন্য দলের নেতারা তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে রাজনীতির জন্য ইতিবাচক বলছেন।

বিএনপির রাজনৈতিক মিত্র বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘বিএনপির মতো একটি দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখা, তাকে গড়ে তোলা এবং দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দলে পরিণত করা আমি মনে করি এটা নিশ্চয়ই তাঁর নেতৃত্বের গুণাবলি ও প্রজ্ঞার বড় একটি পরিচয়। যে সময় তিনি আসছেন, সে সময়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্য দিয়ে বিএনপির মধ্যে যেমন একটি স্বতঃস্ফূর্ততা তৈরি হবে, একই সাথে দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতেও নতুন একটি মাত্রা যুক্ত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

বিএনপি জোটের দীর্ঘদিনের সঙ্গী জামায়াত এখন বিপরীতমুখী রাজনীতিতে থাকলেও তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে। আর জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে সৃষ্টি হওয়া নতুন দল এনসিপিও তাঁর দেশে ফেরাকে দেখছে বিএনপি নেতা-কর্মীদের আশার প্রতিফলন হিসেবে।

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, ‘একজন নাগরিক দেশে ফিরবেন, এটা তো নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। আর তিনি যেহেতু একটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা এবং দীর্ঘদিন ফ্যাসিস্টের নির্যাতনের মুখে বাইরে ছিলেন, এখন আসার জন্য তাঁরা দলীয়ভাবে অনুষ্ঠান করছেন। রাজনীতিতে এগুলোর প্রভাব কী পড়বে না পড়বে, সেটা জাতিই ঠিক করবে। ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ডই সব বলে দেবে।’

এনসিপির সদস্য সচিব আকতার হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ তাঁদের নেতাকে বাংলাদেশে দেখতে চায়। দলীয় নেতা-কর্মীরাও তাঁদের নেতাকে বাংলাদেশে দেখতে চান। দেশে এসে তারেক রহমান বিএনপির হাল ধরবেন, সেটাই আমরা প্রত্যাশা করি।’

এবি পার্টির সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘উনি এতদিন যে আইডিয়াগুলো বলেছেন, নতুন ধারণা দিয়ে রাষ্ট্রকে বদল করার ইচ্ছা ওনার মধ্যে আছে। এটাকে যদি উনি দলে বাস্তবায়ন করতে পারেন, তাহলে সেটা অবশ্যই দলের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ থাকবে না, জনগণের মধ্যেও সঞ্চারিত হবে।’

সবমিলিয়ে তারেক রহমান দেশে সহাবস্থানের রাজনীতির ইতিহাস সৃষ্টি করবেন বলেও আশা প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক নেতারা।


মন্তব্য