বাংলাদেশিদের জন্য মালয়েশিয়ায় স্থায়ী বসবাসের সুযোগ

মালয়েশিয়া
  © ফাইল ছবি

বিদেশিদের জন্য স্থায়ীভাবে বসবাসের (Permanent Residency বা পিআর) সুযোগ দিচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মুসলিম দেশ মালয়েশিয়া। বাংলাদেশসহ যে কোনো দেশের নাগরিকই শর্তসাপেক্ষে এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

মালয়েশিয়ার পিআর সুবিধা

পিআর বা স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে কেউ মালয়েশিয়ায় বসবাস, চাকরি, শিক্ষা ও ব্যবসার সুযোগ পান। যদিও এতে মালয়েশিয়ার নাগরিকত্ব (যেমন ভোটাধিকার) দেওয়া হয় না, তবে অস্থায়ী ভিসাধারীদের তুলনায় অনেক বেশি সুবিধা ভোগ করা যায়। স্থায়ী বাসিন্দারা স্থানীয়দের মতোই স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং ব্যবসার সুযোগ পেয়ে থাকেন।


রেসিডেন্স পাস কী?

রেসিডেন্স পাস (Residence Pass) হচ্ছে একটি বিশেষ অনুমতিপত্র, যা মালয়েশিয়ায় দীর্ঘমেয়াদে থাকার জন্য প্রদান করা হয়। এটি ১৯৬৩ সালের ইমিগ্রেশন রেগুলেশনস-এর ১৬এ ধারা অনুযায়ী নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির ব্যক্তিদের দেওয়া হয়ে থাকে।


রেসিডেন্স পাসের প্রধান ক্যাটাগরি

ক্যাটাগরি ৩: মালয়েশিয়ার নাগরিকের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক

  • মালয়েশিয়ান নাগরিকের স্বামী বা স্ত্রী

  • ১৮ বছরের নিচে জৈবিক, দত্তক বা সৎ সন্তান

  • মালয়েশিয়ায় জন্ম নেওয়া সন্তান থাকলে, বিবাহবিচ্ছেদ বা স্বামী/স্ত্রীর মৃত্যু হলেও আবেদন করা যাবে

  • মালয়েশিয়ান নাগরিকের জৈবিক বাবা-মা

  • শ্বশুর-শাশুড়ি (যদি বৈধভাবে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করেন)

ক্যাটাগরি ৪: মালয়েশিয়ার স্থায়ী বাসিন্দার সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক

  • ১৮ বছরের কম বয়সী জৈবিক সন্তান

  • স্বামী বা স্ত্রী

ক্যাটাগরি ৫: প্রাক্তন মালয়েশিয়ান নাগরিক

  • যাঁরা স্বেচ্ছায় নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন

  • যাঁদের নাগরিকত্ব বাতিল হয়েছে


আবেদন করার যোগ্যতা ও শর্ত

  • পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ৬ মাস থাকতে হবে

  • আবেদনকারীকে একটি বৈধ দীর্ঘমেয়াদি ভিসায় মালয়েশিয়ায় অবস্থান করতে হবে

  • ক্যাটাগরি ৩-এর জন্য কমপক্ষে ৩ বছর এবং ক্যাটাগরি ৪-এর জন্য কমপক্ষে ৫ বছর মালয়েশিয়ায় বসবাস করতে হবে

  • আবেদনকারীর একজন মালয়েশিয়ান নাগরিক স্পনসর থাকতে হবে, যিনি ২১ বছর বা তার বেশি বয়সী

  • আবেদন জমা দেওয়ার সময় স্পনসর ও আবেদনকারী—উভয়কে উপস্থিত থাকতে হবে

  • বিদেশি নথিপত্র মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ট দূতাবাস বা কনস্যুলেট কর্তৃক সত্যায়িত হতে হবে


আবেদন প্রক্রিয়া

  • ক্যাটাগরি ৩ ও ৪-এর আবেদন নিকটবর্তী ইমিগ্রেশন অফিস বা পুত্রজায়ার প্রধান কার্যালয়ে জমা দেওয়া যাবে

  • ক্যাটাগরি ৫-এর জন্য মূল ও ফটোকপি উভয় ধরনের নথি জমা দিতে হবে

  • ক্যাটাগরি ৩ (iii)-এর ক্ষেত্রে সন্তানের পূর্ণ বা যৌথ অভিভাবকত্ব আদালত থেকে প্রমাণ করতে হবে

  • পশ্চিম মালয়েশিয়ায় আবেদন করতে হলে স্পনসর হতে হবে একজন পশ্চিম মালয়েশিয়ার নাগরিক; সাবাহ ও সারাওয়াকের জন্য আলাদা নিয়ম রয়েছে


আবেদন ফি

  • পাঁচ বছরের জন্য আবেদন ফি ৫০০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৪,৩৪৬ টাকা*)

*বিনিময় হার অনুযায়ী সামান্য পরিবর্তন হতে পারে


বিশেষ সুবিধা

রেসিডেন্স পাসধারীরা মালয়েশিয়ায় কাজ, পড়াশোনা বা ব্যবসা করতে পারবেন—অন্য কোনো পাসে রূপান্তরের প্রয়োজন নেই, তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন লাগতে পারে।

আরও বিস্তারিত তথ্য ও আবেদন প্রক্রিয়া জানতে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন।


মন্তব্য