অভাবনীয় সাড়ায় শুরু হচ্ছে হজ্ব-ওমরা মেলা
- বাংলাকন্ঠ রিপোর্ট:
- প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৫, ০৫:৫৫ PM , আপডেট: ১০ আগস্ট ২০২৫, ০৬:৫০ PM

অতীতের সব রেকর্ড ভাঙ্গতে যাচ্ছে হজ্ব এজেন্সিস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। আর মাত্র তিন পরেই ১৪ আগষ্ট থেকে তিনদিনব্যাপী হজ্ব ও ওমরা মেলায় হাবের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক এজেন্সি ও সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের অংশগ্রহনের কারণেই অন্য উচ্চতায় এ বছর মেলা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।
হাব সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১৪ আগস্ট (শনিবার) থেকে রাজধানীর চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিতব্য হজ ও ওমরাহ মেলার সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর উদ্যোগে এ মেলায় অংশ গ্রহণ করতে ইতিমধ্যেই ১৫২ টি এজেন্সি স্টলের জন্য আবেদন করেছে। এজন্য হাব চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের নীচতলার সবগুলাে হলও ইতিমধ্যে বুকিং করেছে।
হাব'র পরিকল্পনায় অনুষ্ঠিতব্য মেলায় মোট ১৫৪টি স্টলের লে-আউট চূড়ান্ত করা হয়েছে। এসব স্টলে অধিকাংশই হজ্ব-ওমরা নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন এজেন্সির জন্য বরাদ্দ দেওয়া হবে। এজেন্সিগুলো ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ব্যাংক, এয়ারলাইন্স কোম্পানী ও মোবাইল অপারেটর কোম্পানী মেলায় তাদের স্টল নিয়ে অংশগ্রহণ করবে। ইতিমধ্যেই আজ এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিভিন্ন এজেন্সি, ব্যাংক ও এয়ারলাইন্স মিলে মোট ১৫২ টি স্টল বরাদ্দ নিয়েছে বলে জানা গেছে।
এরমধ্যে বরাদ্দপ্রাপ্ত এজেন্সিগুলো তাদের স্টলে হজ্ব ও ওমরায় গমনেচ্ছুকদের বিভিন্ন ধরনের সেবা ও প্যাকেজ প্রদানের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে মেলার উদ্ধোধন করার কথা রয়েছে। একই সঙ্গে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত, বিভিন্ন ব্যাংক ও এয়ারলাইন্সের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
তিন দিনব্যাপী এ মেলা চলবে ১৬ আগস্ট (সোমবার) পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৭টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এ আয়োজন।
হজ মুসলিমদের পাচঁটি স্তম্ভের একটি এবং হজযাত্রীরা আল্লাহ তায়ালার মেহমান। তারা যেন সুন্দরভাবে এ মহান ইবাদাত পালন করতে পারেন, তাদের যাত্রার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতেই সরকার অনুমোদিত হজ ও ওমরাহ এজেন্সিগুলো মেলায় অংশ নিচ্ছে।
২০২৬ সালের হজ কার্যক্রম আরও সুশৃঙ্খল, হয়রানিমুক্ত ও মানসম্পন্ন করার লক্ষ্যে ব্যাপক প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন হাব সভাপতি সৈয়দ গোলাম সরওয়ার। তিনি বাংলাকন্ঠকে বলেন, হজ ব্যবস্থাপনায় আমরা এবার আগের চেয়ে আরও বেশি জিরো টলারেন্স নীতিতে যাচ্ছি। এ মেলায় আমাদের ইসি কমিটিসহ এজেন্সি মালিকগণ সরাসরি উপস্থিত থাকবেন। ফলে হজযাত্রী হয়রানির সুযোগ নেই তবুও কোনো অনুমোদিত এজেন্সি যদি যাত্রী হয়রানিতে জড়ায়, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং প্রয়োজনে লাইসেন্স বাতিল করা হবে।
তিনি বলেন, মেলা চলাকালীন হাব, ধর্ম মন্ত্রণালয় ও সিভিল এভিয়েশনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় থাকবে, যা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।
হাব মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার বাংলাকন্ঠকে বলেন, প্রতি বছরই দেখা যায় সাধারণ মানুষ অসাধু ও অবৈধ এজেন্সির চটকদার বিজ্ঞাপনে প্রভাবিত ও প্রতারিত হয়। তাদের ফাঁদে পড়ে অনেকে অতিরিক্ত খরচ, ভোগান্তি ও হয়রানির শিকার হন। এসব বন্ধে একটি স্বচ্ছ, নির্ভরযোগ্য ও একীভূত ব্যবস্থার প্রয়োজন, যার একটি বড় অংশ হচ্ছে এ জাতীয় পর্যায়ের হজ ও ওমরাহ মেলা। বৈধ হজ এজেন্সি ও হজ-ওমরাহ যাত্রীদের মধ্যে এ মেলা যোগসূত্র তেরি করবে।
এবারের আয়োজনে প্রায় ১৫২টি অনুমোদিত হজ ও ওমরাহ এজেন্সি অংশ নিচ্ছে, যারা হাজি ও ওমরাহ যাত্রীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজ ও তথ্যসেবা প্রদান করবে। অংশগ্রহণকারীরা নিজের সামর্থ্য ও পছন্দ অনুযায়ী উপযুক্ত প্যাকেজ বেছে নিতে পারবেন। এ ছাড়া টিকিট বুকিং, অর্থ লেনদেন এবং অন্যান্য ভ্রমণ-সম্পর্কিত সহায়তার জন্য মেলায় উপস্থিত থাকবেন বিভিন্ন ব্যাংক ও এয়ারলাইনসের প্রতিনিধিরা। এর আগে অতীতে অনুষ্ঠিত কোনো হজ মেলায় এত সংখ্যক এজেন্সি অংশগ্রহণ করেনি যা এবার করছে।
হাবের সহসভাপতি শামীম সাঈদী বলেন, যারা আল্লাহর ঘরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তারা যেন নির্বিঘ্নে আল্লাহর ইবাদত করতে পারেন সে লক্ষ্যেই এ আয়োজন। বিগত বছরগুলোতে দেখা গেছে, অনেক হাজি হজক্যাম্পে এসেও শেষ মুহূর্তে টিকিট না পেয়ে যেতে পারেননি। এমন পরিস্থিতি রোধে এবার শুরু থেকেই সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।