হজ্ব-ওমরায় দালালের প্রভাব দূর করতেই মেলার আয়ােজন
- বাংলাকন্ঠ রিপোর্ট:
- প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৫, ০৫:৫৬ PM , আপডেট: ১২ আগস্ট ২০২৫, ০৬:১০ PM

হজ্ব ও ওমরায় মধ্যস্বত্বভোগী দালাল বা ফড়িয়াদের প্রভাব দূর করতেই জাতীয় পর্যায়ে হজ্ব-ওমরা মেলার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) নেতৃবৃন্দ। তারা বলছেন, “মেলায় আগত দর্শনার্থীরা বিভিন্ন হজ এজেন্সির প্যাকেজ ও সুবিধা যাচাই করে মধ্যস্বত্বভোগীর প্রভাব ছাড়াই সরাসরি বুকিং বা চুক্তি করতে পারবেন।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল ভিক্টোরীতে এক সংবাদ সম্মেলনে হাব সভাপতি সৈয়দ গোলাম সারওয়ার এ কথা জানান।
তিনি বলেন, হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর আয়োজনে তিন দিনব্যাপী ‘হজ ও ওমরাহ মেলা-২০২৫ আগামী বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) থেকে শুরু হচ্ছে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এই মেলা চলবে ১৬ আগস্ট পর্যন্ত।
এতে হজ ও ওমরাহ যাত্রীদের জন্য প্রাসঙ্গিক তথ্য তুলে ধরে হাব সভাপতি সৈয়দ গোলাম সারওয়ার বলেন, “বাংলাদেশে হজযাত্রীদের অধিকাংশই দেশের গ্রামীণ এলাকায় বাস করেন। বেশির ভাগ হজ ও ওমরা এজেন্সির কার্যক্রম ঢাকা-কেন্দ্রিক হলেও, এই মেলার মাধ্যমে দেশের সব হজ এজেন্সি ও হজযাত্রীদের মধ্যে পরিচিতি ও যোগাযোগের সুযোগ তৈরি হবে। হজ ব্যবস্থাপনায় আধুনিক প্রযুক্তি, সঠিক তথ্য এবং অসাধু ব্যক্তি ও মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রভাব থেকে মুক্ত সেবা প্রদানের লক্ষ্যেই আমাদের এই আয়োজন।”
তিনি আরও বলেন, “হজ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য, হজ ও ওমরাহর বিধিবিধান, এবং সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ সম্পর্কে হজগমনেচ্ছুদের অবহিত করাই এই ফেয়ারের মূল উদ্দেশ্য।” এবারের ফেয়ারে হজ ব্যবস্থাপনায় ই-হজ সিস্টেম ও রুট টু মক্কা উদ্যোগ বিষয়ে হজ যাত্রীগণ ধারনা নিতে পারবেন।
সংবাদ সম্মেলনে হাবের মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার বলেন, “ফেয়ারে আগত দর্শনার্থীরা বিভিন্ন হজ এজেন্সির প্যাকেজ ও সুবিধা যাচাই করে মধ্যস্বত্বভোগীর প্রভাব ছাড়াই সরাসরি বুকিং বা চুক্তি করতে পারবেন। পাশাপাশি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সহায়তা সম্পর্কেও হজগমনেচ্ছুরা তথ্য পাবেন।”
তিনি জানান, হজ ব্যবস্থাপনা একটি বহু অংশীজননির্ভর কার্যক্রম। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও হাব ঐতিহ্যগতভাবে যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লেনদেন করে, তারা দায়িত্বশীল ও বিশ্বস্তভাবে হজযাত্রীদের সেবা প্রদান করে থাকে। এ বিষয়ে ধারণা দেওয়ার প্রচেষ্টাও থাকবে মেলায়।
তিনি জানান, বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম হজযাত্রী প্রেরণকারী দেশ। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রায় ৯৬ শতাংশ হজযাত্রী ও শতভাগ ওমরাহ যাত্রী সৌদি আরব গমন করেন। হাবের সদস্যদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে এসব কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
হাব অতীতে হজ ব্যবস্থাপনায় নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা থাকলেও বর্তমান সরকার ও হাবের যৌথ প্রচেষ্টায় আমূল পরিবর্তন এসেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, হজ্বে এবার শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। ফলে হজযাত্রীদের দুর্ভোগ অনেকটাই কমেছে। এই ধারা অব্যাহত রেখে ভবিষ্যতে আরও উন্নত ও সুশৃঙ্খল হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে সরকার ও হাব যৌথভাবে কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, হাব ও সরকারের আন্তরিকতায় এ বছর (২০২৫) বাংলাদেশের হজ্ব ব্যবস্থাপনা গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় এক নাম্বার হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। আশা করি এ ধারা ভবিষ্যতেও অব্যহত থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে হাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি শামীম সাঈদী, সহ সভাপতি হাফেজ নূর মোহাম্মদ, যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ জাফর উদ্দিন, অর্থ সচিব আবদুল হামিদ, জনসংযোগ সচিব হাফেজ জাহিদ আলম, সাংস্কৃতিক সচিব মোহাম্মদ কাউসার উদ্দিনসহ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।