৩৫০০ বছরের প্রাচীন নগরীর সন্ধান
- আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৩:১১ PM , আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৩:১১ PM

লাতিন আমেরিকার দেশ পেরুর উত্তরাঞ্চলের বারাঙ্কা প্রদেশে ৩,৫০০ বছরের পুরোনো একটি প্রাচীন নগরীর সন্ধান পেয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। ‘পেনিকো’ নামের এই নগরী একসময় উপকূল, পাহাড় ও আমাজন অঞ্চলের মানুষের মধ্যে বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হতো। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৬০০ মিটার উচ্চতায় একটি পাহাড়ি এলাকায় অবস্থিত এই নগরীটি ঐতিহাসিক গুরুত্বে ভরপুর।
পেনিকোর আশপাশেই রয়েছে কারাল সভ্যতার নিদর্শন, যা প্রায় ৫,০০০ বছর আগে গড়ে ওঠে এবং আমেরিকার প্রাচীনতম সভ্যতা হিসেবে বিবেচিত। গবেষকদের মতে, কারাল সভ্যতা মিশর, ভারত, সুমের ও চীনের প্রাচীন সভ্যতার সমসাময়িক। এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে অনলাইন ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘ডেইলি মেইল’।
প্রত্নতাত্ত্বিকরা পেনিকোতে খনন করে পেয়েছেন বৃত্তাকার ধর্মীয় স্থাপনা, বসবাসযোগ্য ঘরবাড়ি, প্রধান চত্বরে মাটির ভাস্কর্য ও দেয়ালে খোদাই করা চিত্র, একটি ‘পুটুতু ’-এর চিত্র। পুটুতু হলো একটি শাঁখজাতীয় বাদ্যযন্ত্র। এটি বহু দূর পর্যন্ত শব্দ ছড়াতে সক্ষম। পাওয়া গেছে মাটির তৈরি মানব ও প্রাণীর মূর্তি, সামুদ্রিক ঝিনুক দিয়ে তৈরি মালা ও অলংকার, কমপক্ষে ১৮টি স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ, যা গত আট বছরে খুঁটিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
এই নগরীর গড়ে ওঠে ১৮০০ থেকে ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে। অর্থাৎ প্রাচীন মেসোপটেমিয়া বা সিন্ধু সভ্যতার সময়কার এই নগরী। রুথ শাদি পেনিকো নিয়ে গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, কারাল সভ্যতা যখন জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কায় পতনের মুখে পড়ে, তখনই এই পেনিকো নগরী বিকশিত হয়। এটি ছিল এক কৌশলগত বাণিজ্য কেন্দ্র। আর্কিওলজিস্ট মার্কো মাচাকুয়াই বলেন, পেনিকো হচ্ছে কারাল সভ্যতার উত্তরসূরি- এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ, যা অতীতকে নতুনভাবে বোঝার সুযোগ করে দিচ্ছে।
পেরুতে রয়েছে বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন সব ঐতিহাসিক নিদর্শন। এর মধ্যে আছে মাচু পিচু- ইনকাদের বিখ্যাত নগরী, নাজকা রেখা- যা মরুভূমিতে আঁকা রহস্যময় বিশাল চিত্র, চান চান- যা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কাদামাটির নগরী। চান চান ছিল চিমু সাম্রাজ্যের রাজধানী। সেখানে ছিল ১০টি প্রাসাদ এবং প্রায় ৩০,০০০ অধিবাসীর বসবাস। গত মে মাসে পেরুর ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট চান চানে এক যুবক দেয়ালে অশ্লীল গ্রাফিতি এঁকে চরম ক্ষোভের জন্ম দিয়েছেন। পেরুর সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় জানায়, এটি আমাদের ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতি ভয়াবহ অবমাননা। দোষী সাব্যস্ত হলে ৬ বছরের জেল হতে পারে ওই যুবকের। ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয় এবং প্রশ্ন উঠে- কেন এমন গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলিতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেই?