সাপের কেন একাধিক লিঙ্গ থাকে?
- বাংলাকন্ঠ রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২৫, ০১:৪০ AM , আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২৫, ০১:৪৫ AM

প্রকৃতিতে যত প্রাণী আছে তার মধ্যে বিষধর হিসেবে সর্বাধিক পরিচিত হচ্ছে সাপ। সেই সাপের বংশ বৃদ্ধির ব্যাপারে আমরা কতটুকুই বা জানি। শুধু জানি সাপ ডিম দেয় আর সেই ডিম থেকে বাচ্ছা ফােটে। কিন্তু সাপকে কি কখনো পারস্পরিক মিলন বা সহবাস করতে দেখা গেছে? হলেই বা কিভাবে সে কার্য সম্পাদন হয়?
বৈজ্ঞানিক গবেষণায় জানা গেছে, একটি পুরুষ সাপের দুইটি লিঙ্গ থাকে। কিন্ত কেন? এ নিয়েও বিস্তর গবেষণা হয়েছে। বিজ্ঞানীদের সেই গবেষণা বলছে, আসলে সাপের প্রজনন কৌশল এবং বিবর্তনের সাথে বিষয়টি জড়িত।
কারণ:
১. বিবর্তনীয় সুবিধা:
অর্থ্যাৎ সাপের ক্ষেত্রে দুটি হেমিপেনিস থাকায় তাদের প্রজননের সুযোগ বেড়ে যায়। এর মানে হল যখন তারা কোনো সঙ্গিনীর সাথে মিলিত হয় তখন তারা যেকোনো একটি লিঙ্গ ব্যবহার করতে পারে। এটা বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ যখন সাপেরা এমন পরিবেশে থাকে যেখানে তাদের বিপরীত লিঙ্গের সাপের সাথে ঘন ঘন দেখা নাও হতে পারে।
২.আঁকড়ে ধরা: সাপের পেছনের পা নেই। তাই তারা মিলনের সময় সঙ্গিনীকে আঁকড়ে ধরতে পারে না। দুটি হেমিপেনিস তাদের সঙ্গিনীর সাথে শক্তভাবে লেগে থাকতে সাহায্য করে। প্রতিটি হেমিপেনিস সাধারণত ছোট ছোট কাঁটা বা খাঁজযুক্ত হয় যা মিলনের সময় সঙ্গিনীকে আঁকড়ে ধরতে সুবিধা করে। যাতে তারা সহজেই বিচ্ছিন্ন না হয়।
৩. বিকল্প হিসেবে ব্যবহার: প্রজননের সময় একটি লিঙ্গ যদি কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা ঠিকমতো কাজ না করে, তবে অন্যটি ব্যবহার করার বিকল্প সুযোগ থাকে।
৪. নির্দিষ্ট অবস্থান: সাপের ক্ষেত্রে মিলনের সময় পুরুষ সাপ এবং স্ত্রী সাপের শারীরিক অবস্থান বেশ জটিল হয়। সেক্ষেত্রে দুটি হেমিপেনিস যেকোনো দিক থেকে মিলনের সক্ষমতা বাড়ায়।
৫. শুক্রাণু স্থানান্তরে দক্ষতা: দুটি হেমিপেনিস থাকার ফলে পুরুষ সাপ একটি মিলনের পরপরই অন্য একটি লিঙ্গ ব্যবহার করে দ্রুত দ্বিতীয়বার শুক্রাণু স্থানান্তর করতে পারে। এতে তাদের প্রজনন সাফল্য বৃদ্ধি পায়।
অর্থ্যাৎ সাপের দুটি লিঙ্গ থাকার বিষয়টি তাদের টিকে থাকার এবং প্রজনন সফল করার একটি বিবর্তনীয় কৌশল, যা তাদের শারীরিক গঠন এবং প্রজনন পদ্ধতির সাথে মানানসই।