ডিভিডেন্ড শূন্য ১৬ ফান্ড, ২টির সামান্য

ডিভিডেন্ড
  © ফাইল ছবি

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের জন্য আরও এক দুঃসংবাদ। শেয়ারবাজারে দীর্ঘমেয়াদি মন্দা পরিস্থিতি এবং আনরিয়েলাইজড ক্ষতির বিপরীতে উচ্চ হারে প্রভিশন রাখার বাধ্যবাধকতার ফলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে অধিকাংশ ক্লোজড-এন্ড মিউচুয়াল ফান্ড ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে পারেনি। এতে বিনিয়োগকারীরা আরও একটি কঠিন সময় পার করছেন।

ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৩৭টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক বিবরণী প্রকাশ করেছে ১৮টি। এর মধ্যে ১৬টি ফান্ড লোকসানে থাকায় কোনো ডিভিডেন্ড দিতে পারেনি। শুধুমাত্র দুটি ফান্ড— ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ড ও গ্রামীণ ওয়ান: স্কিম টু যথাক্রমে ৩.৩ শতাংশ এবং ৭.৫ শতাংশ নগদ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে।

ফান্ড ম্যানেজারদের মতে, মিউচুয়াল ফান্ড খাতের দুর্বল পারফরম্যান্সের পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। সবচেয়ে বড় আঘাত এসেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচকের পতন থেকে। ২০২৫ অর্থবছরে সূচক ৯.৪০ শতাংশ বা ৫০২ পয়েন্ট কমে যাওয়ায় মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর পোর্টফোলিওতে বড় ধরনের ক্ষতি হয়। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও অর্থনৈতিক চাপের কারণে অনেক ভালো শেয়ারের দামও নিচে নেমে গেছে।

এছাড়া অবাস্তব ক্ষতির বিপরীতে ১০০ শতাংশ প্রভিশন রাখার বাধ্যবাধকতা ফান্ডগুলোর নগদ প্রবাহ কমিয়ে দিয়েছে, ফলে ডিভিডেন্ড দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত তহবিল থাকেনি। একইসঙ্গে গত দুই বছরে কোনো নতুন আইপিও (Initial Public Offering) না আসায় সেখান থেকেও সম্ভাব্য লাভ থেকে বঞ্চিত হয়েছে মিউচুয়াল ফান্ডগুলো।

ফান্ড ম্যানেজাররা জানান, তাদের আয়ের প্রধান উৎস শেয়ার লেনদেন থেকে মূলধন লাভ। কিন্তু বাজার মন্দার কারণে গত অর্থবছরে এ সুযোগ কার্যত অনুপস্থিত ছিল। এর ফলে অধিকাংশ ফান্ডের নিট সম্পদ মূল্য (এনএভি) ফেস ভ্যালুর নিচে নেমে এসেছে।

তবে কিছু ফান্ড আগের বছরের তুলনায় পরিস্থিতি সামাল দিতে পেরেছে। আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার জানিয়েছেন, প্রভিশনিংয়ের ফলে লোকসান কমাতে সুবিধা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, আইসিবি এএমসিএল ফার্স্ট অগ্রণী ব্যাংক মিউচুয়াল ফান্ড আগের বছরের ১৬৬ মিলিয়ন টাকা লোকসান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে এবার ৩৫ মিলিয়ন টাকা মুনাফা অর্জন করেছে।

তবুও বাজার বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, একের পর এক শূন্য ডিভিডেন্ড ঘোষণার কারণে বিনিয়োগকারীদের আস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বর্তমানে তালিকাভুক্ত ৩৭টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে মাত্র তিনটি— ফার্স্ট প্রাইম, গ্রামীণ-টু ও রিলায়েন্স-ওয়ান— ফেস ভ্যালুর উপরে লেনদেন হচ্ছে।


মন্তব্য