দুঃসাহসী শিক্ষিকা আর নেই
- বাংলাকন্ঠ রিপোর্ট:
- প্রকাশ: ২২ জুলাই ২০২৫, ০৯:২২ AM , আপডেট: ২২ জুলাই ২০২৫, ০৯:২২ AM

বিমান বিধ্বস্তের পর ভয়াবহ আগুনের মধ্যে সাহসিকতার পরিচয় দেন মাইলস্টোন কলেজের কো-অর্ডিনেটর মাহরিন চৌধুরী (৪২)। তিনি একে একে ক্লাসরুম থেকে প্রায় ২০ জন শিশুশিক্ষার্থীকে নিরাপদে বের করে আনেন। তবে শেষ পর্যন্ত নিজে আর বের হতে পারেননি। আগুনে মারাত্মক দগ্ধ হন তিনি।
সোমবার (২১ জুলাই) তাকে উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে রাতেই আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শাওন বিন রহমান।
এরপর মাহরিন চৌধুরীর ভাই মুনাফ মুজিব চৌধুরী এক ফেসবুক পোস্টে বোনের মৃত্যু সংবাদ জানিয়ে লেখেন, মাহরিন আপু আর আমাদের মাঝে নেই। আমার বড় বোন, যিনি আমাকে মায়ের মতো করে বড় করেছেন।
তিনি আরও লিখেছেন, মাইলস্টোনে কো-অর্ডিনেটর হিসেবে কাজ করতেন মাহরিন। আগুন লাগার পর তিনি প্রথমে বের হয়ে আসেননি, বরং যতজন শিক্ষার্থীকে সম্ভব বের করে আনার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি ১০০ শতাংশ দগ্ধ হন। আজ আপনারা দয়া করে আমার প্রিয় বোনের জন্য দোয়া করবেন। তিনি তার দুই ছেলেকে রেখে আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। তাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়ার পর আমি আরও বিস্তারিত জানাব।
এর আগে, মাহরিনের স্বামী মনসুর হেলাল বলেন, মাহরিন জানিয়েছে- স্কুল ছুটির পর বাচ্চাদের নিয়ে বের হচ্ছিলেন। ঠিক তখনই গেটের সামনে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। নিজে দগ্ধ হলেও সে বাচ্চাদের বাঁচানোর চেষ্টা করতে গিয়ে তার পা থেকে মাথা পর্যন্ত শরীরের সব জায়গা পুড়ে গেছে।
উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়া এক সেনাসদস্য বলেন, ম্যাডাম ভেতরে ঢুকে বাচ্চাগুলোকে বের করে দিয়েছেন, তারপর উনিই বের হতে পারেননি।
মাহরিনের উদ্ধার করা শিক্ষার্থীরা বলে, ম্যাডাম বারবার বলছিলেন, দৌঁড়াও, ভয় পেও না। আমি আছি।
প্রসঙ্গত, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় পাইলটসহ ২৮ জন নিহত হয়েছেন। এতে দগ্ধ হয়েছে আরও ১৭১ জন। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাই সময়ের সাথে সাথে মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে।