পশ্চিম তীরে কী করছে ইসরায়েল?

ইসরায়েল
  © সংগৃহীত

গত ২২ মাস ধরে ফিলিস্তিনের অধিকৃত গাজায় গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের পাশাপাশি পশ্চিম তীরেও দখলদারিত্ব ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। শুধু ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর ভাঙচুর করেই ক্ষান্ত হয়নি ইসরায়েলি বাহিনী। প্রকৃতির প্রতিও নির্মমতার জানান দিয়ে যাচ্ছে আইডিএফ। দখলকৃত পশ্চিম তীরে তিনদিনের অভিযানে ৩ হাজারেরও বেশি জলপাই গাছ কেটে ফেলেছে নেতানিয়াহু বাহিনী, যা অঞ্চলটির কৃষকদের জীবিকা নির্বাহের মূল উপাদান। একমাত্র সহায়-সম্বল হারিয়ে অনেক ফিলিস্তিনি কৃষকই এখন নিঃস্ব।

মূলত, এক ইসরায়েলি নাগরিক গুলিবিদ্ধের ঘটনায় পশ্চিম তীরের উত্তরাঞ্চলীয় আল মুঘায়্যির গ্রামে সামরিক অভিযান শুরু করে আইডিএফ। মাত্র ৭২ ঘণ্টার অভিযানে আমূল বদলে যায় গ্রামের চিত্র। ঘর-বাড়িতে তাণ্ডব তো ছিলোই, রেহায় পায়নি কৃষিজমিও।

স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, প্রায় ৫০০ একর আবাদি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইসরায়েলি নির্মমতায়। উপড়ে ফেলা হয়েছে ৩ হাজার ১শ’টিরও বেশি জলপাই গাছ। এসব গাছেই জীবিকা নির্বাহ করতো গ্রামটির প্রায় চার হাজার বাসিন্দা।

পশ্চিম তীরের এক কৃষক জামাল আবু আলিয়া বলেন, আমার বাড়ি থেকে আমার জমি দেখা যায়। তারা যখন আমার বাগান ধ্বংস করছিলো, চেয়ে চেয়ে দেখছিলাম। কিছুই করার ছিল না, ভেতর থেকে শুধু জ্বলেছি। যা ঘটেছে তা বর্ণনা করার মতো কোনো শব্দ আমার কাছে নেই।

তিনি আরও বলেন, জমি দখল করে আমাদের উৎখাত করাই তাদের উদ্দেশ্য। তারা হয়তো আমাদের গাছপালা-বাগান উপড়ে ফেলতে পারে কিন্তু আমাদের কখনওই উপড়ে ফেলা যাবে না। আমরা প্রতিরোধ করব। আমাদের শেকড় আমাদের জলপাই গাছের চেয়েও গভীর।

অভিযোগ ওঠে, আইডিএফের সাথে ইসরায়েলি দখলদাররাও অংশ নেয় গাছ কাটার এই ধ্বংসযজ্ঞে। তেলআবিবের দাবি- প্রতিরক্ষা স্বার্থেই উপড়ে ফেলা হয়েছে গাছ। কিন্তু আসল উদ্দেশ্য কি সেটাই?

উল্লেখ্য, জীবিকার প্রধান উৎস হিসেবে সাধারণত জলপাই চাষ করে থাকেন দখলকৃত পশ্চিম তীরের কৃষকরা। অঞ্চলটির অন্তত এক লাখ পরিবার কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত। পশ্চিম তীরের জলপাইয়ের খ্যাতি রয়েছে বিশ্বজুড়ে। কিন্তু, ইসরায়েলি হামলায় দিনের পর দিন ধ্বংসের মুখ দেখেছে বিশাল এই খাত। ধারণা করা হয়, পশ্চিম তীরে ১৯৬৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত দশ লাখেরও বেশি জলপাই গাছ ধ্বংস করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।


মন্তব্য