প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির কাঠগড়ায় সরকার
- মো. কামরুজ্জামান
- প্রকাশ: ০৮ আগস্ট ২০২৫, ১১:৪৯ AM , আপডেট: ০৮ আগস্ট ২০২৫, ০২:১৮ PM

এক বছর সময় নেহায়েতই কম নয়। এ সময়ে যেমন অনেক কিছুই করা যায়, আবার কিছু কাজ করতে আরো বেশি সময় নিতে হয়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার আজ (৮ আগস্ট) তাদের এক বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন আসে এ এক বছর সময়ে কী পেয়েছে বাংলাদেশ, কী করেছে সরকার? কতটুকু তাদের প্রাপ্তি আর কী রয়েছে অপ্রাপ্তির হিসেবে?
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের পতন ঘটে। এর আগে ৩৬ দিনের আন্দোলনে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ হতাহত হন। এক বছর আগে এমন এক টালমাটাল পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নিয়েছিল অন্তর্বর্তী সরকার। মাথার উপর ছিল তখন সীমাহীন প্রত্যাশার চাপ। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদী সরকার উৎখাত হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা দেয়ালে দেয়ালে লিখে দিয়েছিল তাদের স্বপ্নের কথামালা। পরিবর্তন আর বদলে দেয়ার আওয়াজ উঠেছিল সর্বত্র। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে, মানুষের নিরাপত্তা দিতে রাস্তায় নেমে সাধারণ ছাত্র-জনতা বড় প্রত্যাশা তৈরি করেছিল পরিবর্তনের।
ছাত্র-জনতার সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণের গুরুদায়িত্ব নিয়ে গত বছরের ৮ই আগস্ট দায়িত্ব গ্রহণ করে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। পতিত সরকারের গণহত্যা ও লুটপাটের বিচার, রাষ্ট্র সংস্কার এবং একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন আয়োজনকে প্রধান লক্ষ্য করে যাত্রা শুরু করা সরকারের এক বছর পূর্তি হচ্ছে আজ। এই এক বছরের মানুষের প্রত্যাশা কতোটা পূরণ করতে পেরেছে সরকার। কতোটা পূরণ করতে পেরেছে দেশের মানুষকে দেয়া প্রতিশ্রুতি। এই হিসাব-নিকাশ চলছে সর্বত্র।
জানা গেছে, জুলাইয়ের শহীদদের আকাঙ্ক্ষা অনুসারে সরকার নির্বাচনী ব্যবস্থা, শাসনব্যবস্থা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, অর্থনীতি, বিচারব্যবস্থা, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং অভ্যুত্থানে নিহতদের বিচারসহ সব খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
এদিকে, গত ৫ আগস্ট, যেদিন শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে গণজাগরণ চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে, সেদিন ‘গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষ্যে সরকার জাতির সামনে জুলাই ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করে।
এছাড়াও এক বছরে অনেক ভালো উদ্যোগ ছিল সরকারের। কিছু উদ্যোগ সফলও হয়েছে। কিছু কাজ মানুষের প্রশংসাও কুড়িয়েছে। কিন্তু নিয়ন্ত্রণহীন বিশৃঙ্খলা ও বেশ কিছু সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ঢেকে দিয়েছে সরকারের এসব সাফল্যকে। তাই এক বছরের মাথায় নানামুখী প্রশ্নের মুখে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার। সরকারের ব্যর্থতা ও প্রত্যাশা অনুযায়ী উদ্যোগ না থাকায় হতাশ সাধারণ মানুষ। অভ্যুত্থানে অংশ নেয়া সাধারণ ছাত্র-জনতাসহ অন্যান্য পক্ষও সরকারের আমলনামা নিয়ে নাখোশ। হতাশা-অপ্রাপ্তির মধ্যেও সরকারের বছরপূর্তির সময়ে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা করায় স্বস্তি ফিরেছে জনমনে। অনেকে মনে করছেন অন্তর্বর্তী সরকার একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করলে অনেক ক্ষেত্রে স্থবিরতা কেটে যাবে। মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের পথ সুগম হবে। ভঙ্গুর পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নেয়ার পর সরকারের নানা উদ্যোগে নিত্যপণ্যের বাজারে অনেকটা স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে। বিদেশি মুদ্রার বাজারে অস্থিরতা কমেছে। তলানিতে থাকা বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ এখন অনেকটা স্বস্তির জায়গায়। এমন সব স্বস্তির খবর ঢাকা পড়েছে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় চরম বিশৃঙ্খলা ও নজিরবিহীন মবের ঘটনা। এসব ঘটনা নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। ’২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। অভ্যুত্থানে জীবন দেয়া হাজারো মানুষের ত্যাগের প্রতি সংশ্লিষ্টদের দায়বোধকে দারুণভাবে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সরকারের এক বছরের মূল্যায়ন করে বলেন, সবচাইতে বড় প্রাপ্তি হলো হাসিনা মুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি আমরা। দীর্ঘমেয়াদে আমাদের যে প্রাপ্তি সেটা হলো একটা ইনক্লুসিভ বাংলাদেশের প্রত্যাশা আমরা করতে পারছি যেখানে সমাজের সুযোগ-সুবিধাগুলো একটা ছোট গ্রুপের কাছে বন্দি হয়ে থাকবে না, সকলের জন্য সমান সুযোগ বরাদ্দ থাকবে। উন্নয়নের সুফল কতোখানি মানুষের কাছে পৌঁছাবে তা নির্ধারণ করবে কিছু ইনস্টিটিউশন। যেমন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, দুর্নীতি দমন কমিশন, নির্বাচন কমিশনসহ অনেক ক্ষেত্রে সংস্কারে সরকার কাজ শুরু করেছে। এই কাজগুলো এগিয়ে নিতে পারলে মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হবে। বাংলাদেশের পোশাক
দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি সরকারের এক বছরের মূল্যায়নে বলেছে, অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বহুবিধ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়া সত্ত্বেও কর্তৃত্ববাদী সরকার পতনের পর এক বছরে বিচার, সংস্কার, নির্বাচন প্রস্তুতি ও রাষ্ট্র পরিচালনার বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।
তবে সুশাসনের আলোকে অপ্রাপ্তি বিশেষ করে একদিকে আইনের শাসন ও স্বচ্ছতার ঘাটতি, স্বার্থের দ্বন্দ্ব ও এডহক ভিত্তিতে সরকার পরিচালনা এবং অন্যদিকে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের একাংশের দলবাজি, দখলবাজি, চাঁদাবাজি, মামলা-বাণিজ্য, গ্রেপ্তার ও জামিন বাণিজ্যের স্বাভাবিকতার চাপে রাষ্ট্রসংস্কারের অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনের পথ কণ্টকাকীর্ণ হচ্ছে। সংস্থাটির ‘কর্তৃত্ববাদী সরকার পতন-পরবর্তী এক বছর: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’’ শীর্ষক ঘটনাপ্রবাহ পর্যবেক্ষণভিত্তিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য দেয়া হয়। রাষ্ট্র সংস্কারের মৌলিক ক্ষেত্রসমূহের বেশির ভাগ বিষয়ে ক্ষমতাপ্রত্যাশী বড় দলসমূহের শর্তসাপেক্ষ ঐকমত্য সংস্কার অঙ্গীকার বাস্তবায়নের সাংবিধানিক ও আইনগত বাধ্যবাধকতা ও সুনির্দিষ্ট পথরেখা অমীমাংসিত থাকায় সংস্কারের প্রত্যাশা পূরণের সম্ভাবনা ঝুঁকির সম্মুখীন বলেও মন্তব্য করেছে সংস্থাটি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় সারা দেশে দায়ের করা প্রায় সব হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার, গণ-অভ্যুত্থানে হত্যায় জড়িতদের বিচার কার্যক্রম শুরু, গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক কনভেনশনে স্বাক্ষর, দুই পর্যায়ে খাত ও প্রতিষ্ঠানভিত্তিক ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন, ৫০টি আইন প্রণয়ন, সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল পুনর্বহাল, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়া চূড়ান্তকরণ, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি; বিদ্যমান আইন অনুসরণ করে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং আর্থিক খাত সংস্কারের লক্ষ্যে বিভিন্ন কমিটি ও টাস্কফোর্স গঠন এবং প্রতিবেদন প্রণয়নকে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেছে টিআইবি।
ওদিকে আইন ও সালিশ কেন্দ্র গতকাল এক মূল্যায়নে জানায়, আওয়ামী লীগ সরকারের মতো অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও দেশে গ্রেপ্তার, হেফাজতে মৃত্যু ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আসক বলে, গত বছর দেশ একটি যুগান্তকারী গণজাগরণের সাক্ষী হয়। এই আন্দোলন কেবল একটি রাজনৈতিক পালাবদল নয়, বরং এটি ছিল একটি নতুন যুগের সূচনা। যেখানে মানুষের অধিকার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও রাষ্ট্রের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার প্রত্যয় নিয়ে গড়ে ওঠে বিস্তৃত গণতান্ত্রিক পুনর্জাগরণ। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আন্দোলনের পরে অন্তর্বর্তী সরকার মানুষের প্রত্যাশা পূরণে হতাশ করেছে। এখনো নির্বিচারে গ্রেপ্তার চলছে। হেফাজতে মৃত্যু ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটছে। যা আগের সরকারের দমনমূলক আচরণের পুনরাবৃত্তির মতোই মনে হচ্ছে। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাবনতির কারণে নাগরিকের নিরাপত্তা নিয়ে উৎকণ্ঠা রয়ে গেছে। দেশে মব সন্ত্রাস আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। রাজনৈতিক প্ররোচনা কিংবা সামাজিক উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে সংঘটিত এসব সহিংস কর্মকাণ্ডে বহু মানুষ নিহত ও আহত হয়েছেন। রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানসমূহ এসব ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। যা মানবাধিকারের জন্য এক গুরুতর উদ্বেগের বিষয়। আইন ও সালিশ কেন্দ্র বলছে, বর্তমান পরিস্থিতির আরেকটি উদ্বেগজনক দিক হলো ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ক্রমাগত দুর্বল ও সুরক্ষাহীন অবস্থা। জনগণের প্রত্যাশা ছিল একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ব্যবস্থা নিশ্চিত হবে।
ওদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক বছরে সরকারের ১২টি অর্জনের কথা উল্লেখ করেছেন। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে এই তথ্য জানান তিনি।
এতে তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পরে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে, বিশৃঙ্খলা এবং প্রতিশোধের প্রবণতা রোধ করেছে। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্ব একটি স্থিতিশীল শক্তি প্রদান করেছে, যা জাতিকে সহিংসতার পরিবর্তে এক করেছে ও নতুন করে গণতান্ত্রিক পথে পরিচালিত করেছে। একটি বিধ্বস্ত অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে, খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি ১৪ শতাংশ থেকে প্রায় অর্ধেকে হ্রাস পেয়েছে, সামগ্রিক মুদ্রাস্ফীতি ৮ দশমিক ৪৮, ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রেকর্ড রেমিট্যান্স, রপ্তানি ৯ শতাংশ বেড়েছে এবং টাকার মান বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ডলারের বিপরীতে শক্তিশালী হয়েছে। ব্যাংকগুলো স্থিতিশীল হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সফল বাণিজ্য শুল্ক আলোচনা শেষ হয়েছে, বড় আকারের বিদেশি বিনিয়োগ সুরক্ষিত করেছে এবং গত সরকারের সময়ের তুলনায় এফডিআই প্রবাহ দ্বিগুণ হয়েছে। সংস্কার কমিশন গঠন করে, ৩০টির বেশি দলের মধ্যে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করে এবং ঐতিহাসিক জুলাই সনদকে চূড়ান্ত করে, ভবিষ্যতে ফ্যাসিবাদের যেকোনো প্রত্যাবর্তনের বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহি এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করে। জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের স্বচ্ছ বিচার চলছে, অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনা এবং আইনের শাসনকে শক্তিশালী করা। ৪টি বড় ট্রায়াল শুরু হয়েছে। শেখ হাসিনার বিচার শুরু হয়েছে।
তিনি লেখেন, প্রবাসীরা প্রথমবারের মতো ভোটার এবং নারীদের অন্তর্ভুক্ত করে অবাধ, সুষ্ঠু এবং উৎসব নির্বাচনের জন্য ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। সংস্কার-চালিত নিয়োগের মাধ্যমে স্বাধীন বিচার বিভাগকে শক্তিশালী করা হয়েছে। দমনমূলক সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করেছে (সরকার), সব সাংবাদিকের মামলা প্রত্যাহার করেছে, সমালোচনার স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দিয়েছে এবং ইন্টারনেটে প্রবেশাধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে, যা দেশের ইতিহাসে প্রথম।
তিনি লেখেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিকে একক দেশের ওপর নির্ভরশীলতা থেকে ভারসাম্যপূর্ণ, বহুমেরু পদ্ধতির দিকে পুনর্বিন্যাস করা। বাণিজ্য, বিনিয়োগ, চিকিৎসা সহায়তা এবং সংকট মোকাবিলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যদের সঙ্গে সহযোগিতা সমপ্রসারণ করা, বাংলাদেশকে একটি সক্রিয়, সম্মানিত আঞ্চলিক ভূমিকায় রেখেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা পুনরায় চালু করা এবং মালয়েশিয়ার মাল্টিপল-এন্ট্রি ভিসা প্রবর্তন। উপসাগরীয় দেশগুলোতে অনিবন্ধিত শ্রমিকদের নিয়মিতকরণ। জুলাই অভ্যুত্থানের সব শহীদ ও আহতদের তালিকা সতর্কতার সঙ্গে করা হয়েছে। ৭৭৫ জন শহীদ যোদ্ধা পরিবারকে প্রায় ১০০ কোটি টাকা সঞ্চয়পত্র ও ভাতা প্রদান এবং ১৩ হাজার ৮০০ জন আহত যোদ্ধাকে ১৫৩ কোটি টাকা সহায়তা প্রদান করা হয়। বঙ্গোপসাগরকে ‘জলভিত্তিক অর্থনীতির’ মূল জাতীয় সম্পদ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা বৃদ্ধি উপকূলীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা সমপ্রসারণ এবং বৈশ্বিক অংশীদারদের সঙ্গে গভীর সমুদ্রের মৎস্য ও শিল্প প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।বাংলাদেশের পোশাক
এক বছরে সরকারের কার্যক্রম নিয়ে নানা প্রশ্ন, হতাশা থাকলেও অভ্যুত্থানের বার্ষিকীর দিনে ৫ই আগস্ট জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের কথা বলেছেন। এই সময়ে নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশনকে ইতিমধ্যে চিঠি দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। গতকাল নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ডিসেম্বরের প্রথমার্ধেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দেয়ায় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ মানুষের মাঝেও।