বাংলাদেশের সেমিকন্ডাক্টর খাতে বিরাট সম্ভাবনা

বিডা
  © ফাইল ছবি

আগামী পাঁচ বছরে দেশের সেমিকন্ডাক্টর খাতে কয়েক শত মিলিয়ন থেকে শুরু করে বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ আসার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন (আশিক চৌধুরী)।

বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বর্তমানে বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর বাজারের আকার ৬০০ বিলিয়ন ডলার, যা ২০৩০ সালের মধ্যে এক ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। অথচ বাংলাদেশ এই খাত থেকে বছরে মাত্র ৬ মিলিয়ন ডলার রাজস্ব আয় করছে, যা খুবই অল্প।

সেমিকন্ডাক্টর খাতে বাংলাদেশে অনকে সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে বিডার চেয়ারম্যান বলেন, “বাংলাদেশে বসে তরুণেরা বিশ্ববাজারে কাজ করছেন, সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের সহযোগিতা করলে দ্রুত বিলয়ন ডলারে দাঁড়াবে। তাই এই খাতের বিশ্ববাজার ধরতে বাড়তি নজর দেওয়া হচ্ছে।”

এদিকে চিপ উৎপাদন বা ফ্যাব্রিকেশন প্রযুক্তি ও মূলধননির্ভর হওয়ায় এখনই সেদিকে না গিয়ে চিপ ডিজাইন এবং টেস্টিং ও প্যাকেজিংয়ের মতো তুলনামূলক সহজ ও সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়ার সুপারিশ করেছে জাতীয় সেমিকন্ডাক্টর টাস্কফোর্স। গতকাল এই সুপারিশগুলো প্রকাশ করা হয়েছে।

টাস্কফোর্সের আহ্বায়ক হিসেবে আশিক চৌধুরী বলেন, “আমরা তিনটি স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে—দক্ষতা উন্নয়ন, নীতিগত সহায়তা ও আন্তর্জাতিক অংশীদারত্ব—পর্যায়ভিত্তিক একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছি। বর্তমানে আমাদের সবচেয়ে বাস্তবসম্মত ক্ষেত্র হচ্ছে ডিজাইন ও টেস্টিং। উৎপাদনে যাওয়ার বিষয়টি পরে বিবেচনা করা যেতে পারে।”

আশিক চৌধুরী বলেন, “২০২৭ সালের মধ্যে অন্তত পাঁচটি সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ ইন্ডাস্ট্রির স্ট্যান্ডার্ড প্রশিক্ষণ ল্যাব স্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি প্যাকেজিং ও টেস্টিং যন্ত্র ব্যবহারে হাতে-কলমে শেখার জন্য শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রোটেশনভিত্তিক প্রশিক্ষণ চালুর প্রস্তাব এসেছে।”

দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে জাতীয় পর্যায়ে হ্যাকাথন, ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ও বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক ক্যাম্পেইন আয়োজনের কথা উল্লেখ করে আশিক চৌধুরী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটগুলো যেন সময়োপযোগী কোর্স আপডেট করে, যেমন প্রসেসর, এআই অ্যাকসেলারেটর, সিগন্যাল প্রসেসিং ইত্যাদি সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া দরকার।” 

তিনি জানান, “নির্বাচিত বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিকন্ডাক্টর খাতে এমএসসি, পিএইচডি ও পোস্টগ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা চালুর পরিকল্পনাও রয়েছে।”

টাস্কফোর্সের সুপারিশ অনুযায়ী গবেষণা, অ্যাসেম্বলি ও প্যাকেজিং ইউনিটের জন্য নির্দিষ্ট শর্তে ১০ বছরের করছাড় এবং বাংলাদেশ ব্যাংক অথবা আইসিটি বিভাগের অধীনে সেমিকন্ডাক্টর ফান্ড গঠনের কথা বলা হয়েছে। এ বিষয়ে আশিক চৌধুরী বলেন, “বিডা পরিচালিত জাতীয় এফডিআই হিটম্যাপে সেমিকন্ডাক্টরকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।”


মন্তব্য