শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের রেকর্ড অভিযোগ নিষ্পত্তি
- বাংলাকন্ঠ রিপোর্ট:
- প্রকাশ: ১৮ আগস্ট ২০২৫, ১০:৩২ AM , আপডেট: ১৮ আগস্ট ২০২৫, ১০:৩২ AM
-11836.jpg)
শেয়ারবাজার বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ নিষ্পত্তির অন্যতম অনলাইন প্ল্যাটফর্ম কাস্টমার কমপ্লেইনস অ্যাড্রেস মডিউল (সিসিএএম) এ বছর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। চলতি বছরের প্রথম সাড়ে সাত মাসে প্ল্যাটফর্মটির মাধ্যমে জমা দেওয়া অভিযোগের মধ্যে প্রায় ৪৩ শতাংশের সমাধান হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা ও প্রতিকার নিশ্চিতে এ উদ্যোগ কার্যকর প্রমাণিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সূত্রে জানা যায়, জানুয়ারি থেকে আগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত সিসিএএম-এ মোট ২২৭টি অভিযোগ জমা পড়ে। এর মধ্যে ৯৮টির নিষ্পত্তি হয়েছে, আর ১২৯টি অভিযোগ এখনো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে চালু হওয়া সিসিএএমের মাধ্যমে ক্যাশ ও স্টক ডিভিডেন্ড বকেয়া থাকা, বিক্রি হওয়া শেয়ারের অর্থ না পাওয়া কিংবা অননুমোদিত শেয়ার বিক্রির মতো বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করা হয়।
মাসভিত্তিক হিসাবে দেখা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে সর্বোচ্চ ২৮টি অভিযোগ জমা পড়ে। এর মধ্যে ২৩টির নিষ্পত্তি হয়, যা এ বছরের মধ্যে সর্বাধিক। অন্যদিকে আগস্টে ১১টি অভিযোগ জমা পড়লেও সমাধান হয়েছে মাত্র ২টি। গত সাড়ে তিন মাসে মোট ১০৪টি অভিযোগ দায়ের হয়, যার মধ্যে ৩২টির নিষ্পত্তি হয়েছে, যা প্রায় ৩১ শতাংশ।
দীর্ঘমেয়াদে সিসিএএম-এর কার্যকারিতা আরও বেশি। বিএসইসির হিসাব অনুযায়ী, চালু হওয়ার পর থেকে প্ল্যাটফর্মটিতে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৯৯টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৯৩৬টির সমাধান হয়েছে, যা ৯২.২ শতাংশ।
সিসিএএম চালুর আগে অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য বিনিয়োগকারীদের সরাসরি বিএসইসি বা স্টক এক্সচেঞ্জে যেতে হতো। এতে অভিযোগ সমাধানে কয়েক মাস, কখনো কখনো বছর লেগে যেত। এখন অনলাইনে গড়ে মাত্র ৩৩.৭ দিনে অভিযোগ নিষ্পত্তি হচ্ছে। ফলে বিদেশে থাকা বাংলাদেশিরাও সহজেই অভিযোগ করতে পারছেন।
বিএসইসি কর্মকর্তারা জানান, প্ল্যাটফর্মটির স্বচ্ছতা বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনের প্রধান কারণ। এখন অভিযোগকারীরা অনলাইনে তাদের অভিযোগের অবস্থা দেখতে পান এবং সমাধান হলে ই-মেইল নোটিফিকেশন পান। কোনো অভিযোগ দীর্ঘ সময় ঝুলে থাকলে সিসিএএম থেকে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়।
অভিযোগ দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিএসইসি ইতোমধ্যে স্টক এক্সচেঞ্জ, স্টকব্রোকার এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সিসিএএম নেটওয়ার্কের আওতায় এনেছে। এক্সচেঞ্জগুলো তাদের ট্রেক হোল্ডারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিষ্পত্তি করে, আর সিডিবিএল কাজ করছে ডিপোজিটরি পার্টিসিপেন্টদের বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগ নিয়ে। নির্ধারিত সময়ে সমাধান না হলে বিষয়টি সরাসরি বিএসইসিকে জানানো হয়।
সিসিএএমের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার লেনদেনের বিলম্বিত নিষ্পত্তি, মার্জিন ঋণ, জোরপূর্বক শেয়ার বিক্রি কিংবা শেয়ার হস্তান্তরে ব্যর্থতার কারণে আর্থিক ক্ষতির অভিযোগও জানাতে পারছেন।